Home / বিশেষ সংবাদ / শেখ রেহানার স্বামীর বক্তব্যে সারাদেশে তোলপাড়
শেখ রেহানার স্বামীর বক্তব্যে সারাদেশে তোলপাড়

শেখ রেহানার স্বামীর বক্তব্যে সারাদেশে তোলপাড়

মাহফুজ আনাম ইস্যুতে ব্যতিক্রমী বক্তব্যে সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন বঙ্গবন্ধুর ছোট জামাতা, শেখ রেহানার স্বামী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তার বক্তব্য নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

‘বাবু যাহা কহেন, পারিষদ কহেন তার শতগুণ’ প্রবাদ উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় কন্যা শেখ রেহানার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেছেন, যে অভিযোগে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে একই অভিযোগে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে আছে । বিচার হলে সবার হওয়া উচিত। মাহফুজ আনামকে নিয়ে যা হচ্ছে তা বাড়াবাড়ির পর্যায়।

শেখ রেহানার স্বামী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেছেন, যে অভিযোগে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে এতগুলো মামলা হলো, তা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে আছে।

বুধবার বেসরকারি চ্যানেল বাংলাভিশনের ‘নিউজ অ্যান্ড ভিউজ’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক ছিলেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, মাহফুজ আনাম এখন যে ভুলটা স্বীকার করেছেন তা আরও সাত বছর আগে করার দরকার ছিল। গণতান্ত্রিক সরকার আসার পরপর তিনি ভুল স্বীকার করতে পারতেন। তবে যা-ই হোক, তার এ ভুল স্বীকারের পর যা হচ্ছে তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মনে অনেক কষ্ট আছে। সে অনেক কষ্টে পড়াশোনা করে বড় হয়েছে। মায়ের প্রতি তার দুর্বলতা একটু বেশি। এ জন্য সে একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ফেসবুকে। কিন্তু সে তো মামলা করেনি।’

শেখ রেহানার স্বামী বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কথা বলা হচ্ছে। মানহানি মামলা করা হচ্ছে। কিন্তু মানহানি মামলা তো করবেন তিনি, যার মান হারিয়েছে। এ মামলা সজীব ওয়াজেদ জয় করতে পারত। কিন্তু যেভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হচ্ছে, এটা কীভাবে হচ্ছে তা আমি জানি না।’

ড. সিদ্দিক বলেন, মাহফুজ আনামকে যে ইস্যুতে দোষী করা হচ্ছে, এ ইস্যুতে আগে মাফ চাইতে হবে ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে। ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ‘গাদ্দারি’ করেছেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর জামাতা বলেন, ‘তখন খালু (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান) আমাকে বললেন, তুমি আশরাফকে খবর দাও। আমি আমার ছেলে ববির মাধ্যমে আশরাফকে লন্ডনে খবর দিলাম। আশরাফ আসার পর খালু কিছুটা স্বস্তি পেলেন। তারা দলটাকে রক্ষা করলেন।’ তিনি বলেন, ‘যারা সে সময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, তাদের অনেককে হাসিনা আপা প্রথমবার মন্ত্রিত্ব দেননি। তিনি বলেছিলেন, “আমি ক্ষমা করে দিলাম, তবে ভুলিনি।” আজ সবাই মাহফুজ আনামের পেছনে লাগছেন কেন। ওই নেতাদেরও বিচার হোক।’

অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূয়সী প্রশংসা করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের এই সদস্য বলেন, ‘জয় প্রচণ্ড মেধাবী। আমার ছেলে ববি তার মেধার ধারেকাছেও না। সে আমেরিকার যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো যোগ্যতা রাখে।’ প্রধানমন্ত্রীর পর বঙ্গবন্ধু পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আপনি।

মাহফুজ আনামকে নিয়ে যা হচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি কোনো ভূমিকা পালন করবেন কি?—উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে শেখ রেহানার স্বামী বলেন, ‘বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম সাহেব সুন্দর কথা বলেছেন, মাহফুজ আনামের এখন পদত্যাগ করা উচিত। বিভিন্ন দেশে এমন কালচার আছে। তবে আমাদের দেশে এটি নেই। এ ছাড়া তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তো বলেছেন, মাহফুজ আনাম ক্ষমা চেয়ে মহত্ত্বের কাজ করেছেন। আমাদের ধর্মেও আছে, আল্লাহও ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করে দেন। সবকিছুর পর আমি মনে করি বিষয়টি এখানেই সমাপ্ত হওয়া উচিত।’

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:২০ অপরাহ্ন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার

এমআরআর