Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুরে জীবন্ত মাটি চাপা দিয়ে এতিম যুবককে হত্যার চেষ্টা
চাঁদপুরে জীবন্ত মাটি চাপা দিয়ে এতিম যুবককে হত্যার চেষ্টা

চাঁদপুরে জীবন্ত মাটি চাপা দিয়ে এতিম যুবককে হত্যার চেষ্টা

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুরের গাজী বাড়িতে জীবন্ত মাটিচাপা দিয়ে সোহরাব (১৮) নামের এতিম যুবককে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায় সোহরাবের বসত ঘরের সামনে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোহরাবের বাবা মারা যায় প্রায় ৩ বছর আগে। সেই থেকে সংসার পরিচালনার ভার সোহরাবের হাতে। ওইদিন সোহরাব তাদের মালিকানার অংশের পুকুর থেকে মাটি উত্তোলন করতে গেলে বাধা দেয় দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ওয়াসিম (৩৫)। ওয়াসিম তার বাড়ি থেকে অসামাজিক গালাগাল করতে করতে সোহরাবের বসত ঘরের নিচে নেমেই সোহরাবকে মারধর করতে থাকে। এ সময় সোহরাবকে পুকুরের পাড়ে কাদামাটিতে মুখ চেপে ধরে মাটি চাপা দেয়ার চেষ্টা করে।

পরবর্তীতে ওয়াসিমের ভাই মহসিনও সোহরাবকে মারধর করতে থাকে। জ্ঞান হারিয়ে সোহরাব মাটিতে পড়ে গেলে সোহরাবের মা তাকে বাঁচাতে এলে তাকেও মারধর করে আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন সোহরাবকে কাদামাটি থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়াসিম ও মহসিন সোহরাবকে অমানবিকভাবে মারধর করে।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, ঘটনার সময় আমি কাছেই ছিলাম। সোহরাব তার জায়গা থেকেই ঘরের কাজের জন্য মাটি উঠাচ্ছিলো। দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ওয়াসিম গালাগালি ও অশ্লীল ভাষায় কথা বললে সোহরাব তাকে চুপ করতে বলে। তখন ওয়াসিম ও মহসিন এসে কাদা পানিতে নেমে সোহরাবকে বেদমভাবে মারধর করে মাটিতে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে কখনো শুনিনি। সোহরাব জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আশপাশের মানুষ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

মহসিন জানায়, আমাদের জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করছিলো সোহরাব। আমরা ডাক দিলে আমাদেরকে গালিগালাজ করে তাই আমরা গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। তখন হাতাহাতি হয়েছে।

ওয়াসিম ও মহসিনের বাবা দেলোয়ার জানায়, আমার ছেলেরা অন্যায় করেছে। জীবনে কোনদিন আমি কোনো অন্যায় করিনি। একটা এতিমের উপর এভাবে নির্যাতন করে তারা সত্যি অন্যায় করেছে।

ইউপি সদস্য ইয়াসিন শেখ জানায়, ঘটনা শুনে দৌড়ে এসে দেখি সোহরাবকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। তখন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে বলি। সে সুস্থ হয়ে আসুক তারপর এর সমাধান করা হবে। সোহরাবের ঘরে সংসার চালানোর মতো কেউ নেই। বিনাদোষে সোহরাবকে মেরে থাকলে এর যথার্থ বিচার হবে। এ ব্যাপারে ওয়াসিমের বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

সোহরাবের মা ফাতেমা জানায়, আমার ছেলের কোনো অন্যায় ছিলো না। বিনাদোষে আমার ছেলেকে মারধর করছে। অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। তার নাকমুখে এখনো কাদামাটি লেগে আছে। তার অবস্থা এখন খুবই খারাপ।

মো. জাবেদ হোসেন, ক্রাইম রিপোর্টার

 

|| আপডেট: ১২:১৩ অপরাহ্ন, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সোমবার

এমআরআর