চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী ও যুবলীগের ৩ নেতাকে কাফনের কাপড়ে হত্যার হুমকি দিয়ে লিখা পাঠনোর খবর পাওয়া গেছে। তিনটি কাফনের কাপড়ে ৩ দিনের মধ্যে উপর কলমের কালি দিয়ে লেখা হত্যার হুমকি এবং নিচে দিপু মোহাম্মদ ও ০১৭৯৮১৭৩২২২ মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে বলে ৩ নেতার মাধ্যমে জানা যায়।
বুধবার রাতে ৩ নেতারই বাড়ির আঙ্গিনায় পরিত্যাক্ত প্যাকেটে থাকা কাপড়ে নাম উল্লেখ করে হত্যার হুমকির ঘটনাটি ঘটে।
৩ নেতা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪নং দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পোয়া গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ ফজল আহম্মদ মাস্টার, সহ-সভাপতি আবুল বাশার বেপারী ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জমাদার।
বৃহস্পতিবার রাতে এ ব্যাপারে ৩ নেতাই ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ৩ জনকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১ম অভিযোগে জানা যায়, ইউনিয়নের পশ্চিম পোয়া গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের সভাপতি ফজল আহম্মদ মাস্টারের বাড়ির বৈঠকখানায় রাতের আঁধারে হত্যার হুমকি সম্বলিত লেখা সহকারে কে বা কারা কাপনের কাপড় রেখে যায়। কাপড়ের উপরে উল্লেখ ছিলো, “ফজল আহম্মদ মাস্টার দেশের ডাকাতি, জুয়া, ইয়াবা, বন্ধ করার জন্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওহিদের নিকট গিয়েছিলি। তোর জন্য কাফনের কাপড় পাঠাইলাম। যা খাবি খাইয়াল। তিন দিন সময় দিলাম।”
২য় অভিযোগে জানা যায়, ২ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার বেপারী। তার নাম উল্লেখ করে পশ্চিম পোয়া জামে মসিজিদের বাম পাশের জানালা দিয়ে মসজিদে একটি কাফনের কাপড় ফেলে রাখা হয়। কাপড়ে উল্লেখ ছিলো, “বাসির উল্ল্যাহ তুই ফজল মাস্টার, গিয়াস উদ্দিন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওহিদের কাছে গিয়ে দেশের ডাকাতি, জুয়া, ইয়াবা, বন্ধ করবি। কাপনের কাপড় দিলাম। যা খাবি খাইয়াল। তিন দিন সময় দিলাম। তোদের জম আমি আর রুবেল।”
৩য় অভিযোগে জানা যায়, ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ গিয়াস উদ্দিন জমাদারের বসতঘরের সমানের দরজায় সামনে কাফনের কাপড় ফেলে রাখা হয়। কাপড়ের উপর উল্লেখ ছিলো, “গিয়াস উদ্দিন জমাদার দেশের ডাকাতি, জুয়া ইয়াবা, বন্ধ করার জন্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে গেছিলি। ওসি দারোগা কোট কাচারি আমাদের কিনা। যা খাবি খাইয়া ল’।”
এ সর্ম্পকে ফজল মাস্টার জানান, আমি ভোরে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে যাই। আমার মেয়ে তানজিলা মসজিদে কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে বলে আমার বাড়ির বৈঠক খানায় আমাকে হত্যার হুমকি সম্বলিত একটি কাপনের কাপড়ের প্যাকেট পড়ে আছে। আমি বিষয়টি থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম খান সোহেলকে অবহিত করি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন গত কয়েক দিন পূর্বে আমরা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে এলাকার বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে কথা বলার জন্য গিয়ে ছিলাম।
আবুল বাশার বেপারী জানান, মসজিদের মোয়াজ্জেম আমাকে ডেকে বলেন কে বা কারা আমার নাম দিয়ে মসজিদে কাফনের কাপড় রেখে গেছে এবং উপরে তিন দিনের মধ্যে আমাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন জানান, আমার বাবা কাফনের কাপড়ের প্যাকেটটি সর্বপ্রথম দেখতে পান এবং আমাকে জানান।
এ বিষয়ে এলাকার দীপু আহম্মদ জানান, আমার নামে দেওয়া কাফনের কাপড় সর্ম্পকে আমি কিছুই জানি না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ সর্ম্পকে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলম খাঁন সোহেল জানান, কাফনের কাপড় পাঠিয়ে কাউকে হত্যার হুমকি দেওয়া অত্যন্ত খারাপ একটি কাজ। আমি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur