বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের পর অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবালও পাকিস্তানের সমালোচিত ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজার অশোভন ও অভদ্রজনোচিত আচরণের শিকার হয়েছেন।
পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) তামিমের ব্যাটে তার দলের জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ অশোভন আচরণের শিকার হন টাইগারদের ড্যাশিং ওপেনার।
এ নিয়ে ফেসবুক-টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রমিজ রাজার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। তাকে উদ্দেশ্য করে গালির তুবড়ি ছোটাচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশ-বিদেশের অনেক মিডিয়ায়ও তাকে দেওয়া হচ্ছে ছি-ছিক্কার, দুয়োধ্বনি। ‘আসল ছাগল’, ‘বিরল প্রজাতির ছাগল’, ‘খবিশ রাজা’, ‘ছেঁচড়া’, ‘কানকাটা’, ‘বেতমিজ’, ‘বড় রাজাকার’, ‘অশিক্ষিত’, ‘গাধার বাচ্চা’ ইত্যাদি বিশেষ বিশেষণও জুটছে তার নামের সঙ্গে।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পিএসএলে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে লাহোর কালান্দারসের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় তামিম-মোহাম্মদ হাফিজদের পেশোয়ার জালমি। প্রথম ম্যাচের মতো এই জয়েও প্রধান ভূমিকা রাখেন টাইগার ওপেনার। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয় রমিজ রাজাকে।
তিনি অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সেরে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ঘোষণা করে ডাকেন তামিমকে। অতিথিদের কাছ থেকে পুরস্কার নিয়ে তামিম কথা বলতে গেলে পাকিস্তানি ধারাভাষ্যকার বলে ওঠেন, ‘আই কান্ট স্পিক ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ, হোয়াট উইল বি?’ (আমি তোমার ভাষায় বলতে পারি না/বুঝি না) কিছুক্ষণ ‘অর…’ বিরতি নিয়ে ফের বলতে থাকেন, ‘ওকে ইংলিশ’ (আচ্ছা, ইংরেজিতে হোক)।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্যার ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে তুলনায় আসা তামিমের সঙ্গে রমিজ এমন অশোভন আচরণ করলেও ভদ্রজনোচিত আচরণেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন টাইগারদের প্রায় এক দশকের সেরা ওপেনার।
তবে রমিজের এমন আচরণে প্রশ্ন তুলে ক্রিকেটপ্রেমীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলছেন, এটা নিছকই একজন ক্রিকেটারকে বিব্রত করার অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পিসিএলে তামিম বিদেশি খেলোয়াড় বলে স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের মতো তিনিও ইংরেজিতে কথা বলবেন। তাছাড়া, এমন নয় যে তামিম ক্রিকেটে একেবারেই নবাগত। রমিজ রাজাও তামিমকে প্রথমবার দেখেননি বা এটাই তার প্রথমবার ক্যামেরার সামনে কথা বলা নয়।
ক্ষোভ ঝেড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা বলছেন, বরাবরই বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ক্রিকেটবিরোধী রমিজ রাজা স্বেচ্ছায় এই নিন্দিত আচরণ করেছেন।
এ আচরণে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ইশতিয়াক আহমেদ তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “রমিজ রাজা, আসল ছাগল…”
ইউরোপে অধ্যয়নরত ক্রিকেটপ্রেমী রাফিউল সাব্বির বলেন, “একটা ক্রিকেট লিগ, যেখানে প্রচুর বিদেশি প্লেয়ার খেলতেছে, সেখানে একজন ধারাভাষ্যকার বিদেশি প্লেয়ারের কাছে কেন জানতে চাইবে কোন ভাষায় কথা বলবো, সেইটা বোধগম্য না। পাকিস্তানি ছাগলগুলা ইংরেজি পারে না, সো পাকিস্তানি না হইলে সে ইংরেজিতে কথা বলবে, হিসাব শেষ।… রমিজ রাজার ছাগলামি দিন দিন সীমা ছাড়ায়ে যাচ্ছে…!”
আমিনুল শিমন নামে এক ক্রিকেটপ্রেমী বলেন, ‘রমিজের রম্য, নাই বোধগম্য। ঐ … বাচ্চারে আইক্কাওয়ালা বাঁশ দিয়া জিরোপয়েন্ট দাঁড় করিয়ে রাখা উচিত। ৭১ প্রোপাগান্ডার বীজ এরা।”
সুমন আহমেদ নামে আরেকজন বলেন, ‘কুত্তার লেজ কি সোজা হয়?”
ক্রিকেটপ্রেমী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই …র পোলারা সারাজীবন আমাদের ছোট করে দেখে। রমিজ রাজাকে আমরা ধিক্কার জানাই।”
‘ফালতু লোকের কাণ্ডজ্ঞান ফালতু-ই হবে।” এমন মন্তব্য করেন জব্বার হোসেন নামে আরেক ক্রিকেটভক্ত।
সমুদ্রের সৈকত তার ইচ্ছে প্রকাশ করেন, “মনডায় চায়, ওর তলায় সিরিজ কাগজ দিয়া একটা ডলা দেই।”
রমিজ রাজার এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে মো. আনোয়ার হোসেন তো বলেই ফেললেন, “বাংলাদেশের সকল খেলোয়াড়ের ফিরে আসা উচিত। …দের খেলা না খেলাই ভাল।”
তামিমের আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রমিজ রাজার এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের শিকার হন সাকিব আল হাসানও। সেদিন লাহোর কালান্দারসের সঙ্গে খেলায় সাকিবের করাচি কিংস জিতলে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপস্থাপনার ভার দেওয়া হয় এই রমিজকে। অনুষ্ঠানে তিনি সাকিবের দলের ওপেনার লেন্ডল সিমন্সকে সুপার ইনিংস পুরস্কার দেওয়ার পর ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারও নিতে বলেন। অথচ ম্যাচ বিশ্লেষকরা সে পুরস্কারে ভূষিত করেন সাকিব আল হাসানকে। পরে অবশ্য সেটাকে ‘টাইপো’ ভুল বলে সংশোধনী টানেন রমিজ রাজা।
কেবল পিএসএল নয়, ধারাভাষ্যকার ক্যারিয়ারে সবসময়ই বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব দেখান পাকিস্তানের তৃতীয় সারির এ সাবেক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের খাটো করার অপচেষ্টা করলে সেসময় তার বিরুদ্ধে ‘কানঢাকা রমিজ’ বলে দুয়োধ্বনিও উঠতে থাকে।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ১:০৬ এএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur