Home / শীর্ষ সংবাদ / গর্তে ভরা চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদা রাস্তা : এ ভোগান্তির শেষ কোথায়
গর্তে ভরা চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদা রাস্তা : এ ভোগান্তির শেষ কোথায়

গর্তে ভরা চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদা রাস্তা : এ ভোগান্তির শেষ কোথায়

‘ফরিদগঞ্জের রাস্তাগুলো যেন মরণফাঁদ’ আমাদের বিশেষ প্রতিবেদনের ১ম পর্ব

চাঁদপুর সদরের ইচলী লঞ্চঘাট-চৌরাস্তা থেকে ফরিদগঞ্জের গল্লাক পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার সড়কটি যানবাহনে চলাচলের জন্য যেন মরণফাঁদ। বর্তমানে রাস্তাটি ছোট-খাটো যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাও বিপদজনক হয়ে পড়েছে। যাত্রীসাধারণদের দাবি, তাদের ভোগন্তির শেষ কেথায়? আর কতো গর্ত হলে রাস্তাটি সংস্কারে কর্তৃপক্ষ নজর দিবে?

সম্প্রতি স্থানীয় গণমাধ্যমে রাস্তাটি নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পরেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

তবে গর্তে ভরা রাস্তাটিতে যাত্রীবাহী ছোটখাটো যানবাহনের সংখ্যা দিনদিন কমে গেলেও এখনো বন্ধ হয়নি ট্রাক্টর ও ভারী যানবাহন চলাচল। গর্তগুলো ধুল-বালিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ছোটোখাটো যানবাহনগুলো চলাচল বিপদজনক হয়ে পড়েছে। কারণ বালি কারণে গর্তগুলো অনেকটা অস্পষ্ট হয়ে গেছে। আর এ গর্তগুলো বর্ষা এলে আরো বেশি ভোগন্তির সৃষ্টি করবে।

চাঁদপুর সদরের ইচলী লঞ্চঘাট ও বাগাদী চৌরাস্তা থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা-মুন্সিরহাট হয়ে গল্লাক বাজার পর্যন্ত এসব অঞ্চলের জনসাধারণদের জেলা শহর ও ঢাকার সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদার পরিচিত এ রাস্তাটি।

স্বল্প ধারণক্ষমতা ও প্রয়োজনের চেয়ে কিছুটা সরু রাস্তাটি দিয়ে টোরামুন্সিরহাট থেকে গল্লাক বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৮টি ইটভাটার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও ইট-বালি পরিবহণকারী দানব প্রাক্টরের অতিরিক্ত চলাচলের কারণে রাস্তাটি এখন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অনেকেই এখন ভিন্ন রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া ও সময় ব্যয় করে জেলাশহর কিংবা ঢাকায় যাতায়াত করছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তাদের এ যাতায়াত আগে কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও মূল রাস্তা পুরোপুরি ভেঙ্গে বিলীন আর গর্তে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় রাস্তার পাশ ঘেঁষে (যে স্থান দিয়ে পথচারীরা চলার কথা) চলাচল করছে। এতে করে রাস্তার দু’পাশ দেবে যাচ্ছে।

একাধিকবার রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করে যাত্রীসাধারণদের মনের ক্ষোভ ও বক্তব্যে জানা যায়, বেড়ি বাঁধের ওপর নির্মিত রাস্তাটির দায়িত্ব কি পানি উন্নয়ন বোর্ড, নাকি সড়ক ও জনপদ বিভাগের তা অনেকেই জানেন না। কিন্তু যাত্রীরা যাতায়াতকালে ভোগান্তির শিকার হয়ে বেশিরভাগ সময়েই সরকার ও স্থানীয় সাংসদকে দায়ী করছেন।

রাস্তাটিতে ক্ষণে ক্ষণে লোক দেখানো নামমাত্র মেরামত নিয়েও অভিযোগের অন্ত নেই। বিগত তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে বাঁধের দু’পাশ কিছুটা চওড়া করলেও নতুন করে পাকাকরণের ক্ষেত্রে চওড়া করা হয়নি। এতে করে বড় ধরনের যানবাহন চলাচল ও বর্ষাকালে বৃষ্টির প্রভাবে বাঁধের দু’পাশ আবারও সংকীর্ণ হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর থেকে এ রাস্তাটি মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়নি কিংবা বরাদ্দ হলেও উল্লেখযোগ্য মেরামতেরও কোনো চিত্র দেখা যায়নি।

চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তার ওপর নির্মিত রাস্তাটি স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে ছিলো। ২০০৫ সালে এটিকে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। তাই রাস্তাটি এখনো সংকীর্ণ রয়ে গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, মাঝে মাঝে রাস্তায় সৃষ্ট হওয়া বড় গর্তে বালি ও ইট দিয়ে পরিপূর্ণ করা হয়, কিছুদিন পর আবার গর্ত থেকে ইট ও বালি সরে গিয়ে পুনরায় গর্তের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ও ভুক্তভোগী যাত্রীরা এ ধরনের কাজকে ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেন।

যাত্রীদের কেউ একবার এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে বড় ধরনের কোনো বিপদে পড়া ছাড়া দ্বিতীয়বার চলাচল করতে রাজি নন। তখন চলাচলের জন্য তাকে বিকল্প পথ খুঁজতে হয়।

স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে রাস্তাটির চোখে পড়ার মতো কিংবা মানুষের চলাচলের সম্পূর্ণ উপযোগী হওয়ার মতো সংস্কার হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারের পর সরকার বদলালেও এ রাস্তাটির চেহারা আর বদলাচ্ছে না।

চাঁদপুর সদরের বাগাদী চৌরাস্তা থেকে শুরু করে চান্দ্রা এলাকার আগার পর্যন্ত গর্ত কিছুটা কম হলেও চান্দ্রা রাস্তার মাথা থেকে ইসলামপুর, কৃষ্ণপুর, একতা বাজার, মুন্সিরহাট, কামতা বাজার, গল্লাকসহ দীর্ঘ সড়কটির বেহাল দশা। কিছু কিছু জায়গায় পিচ-ঢালাইয়ের অংশবিশেষ কিঞ্চিৎ দেখা গেলেও অধিকাংশ অংশে এর কোনো চিহ্নও নেই।

কোথাও শুধু ইট, আবার কোথাও আছে শুধু মাটি। বড় বড় গর্ত হয়ে সড়কটি যান চলাচল তো দূরের কথা সাধারণভাবে পায়ে হেঁটে চলাও বিপদের হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেলোয়ার হোসাইন

: আপডেট ৩:২৬ এএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার

ডিএইচ