দ্বিতীয় দফায় অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। নিবন্ধনের কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও ১ মাস বাড়িয়ে তা আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। রোববার তথ্য অধিদফতর থেকে সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অনলাইন গণমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকগণের অনুরোধে অনলাইন নিউজ প্রকাশনার নিবন্ধন ফরম ও প্রত্যয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করেছে সরকার। ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ পর্যন্ত নিবন্ধন ফরম তথ্য অধিদফতরে জমা দেওয়া যাবে।’
অনলাইন পত্রিকার প্রকাশকদের পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং অপসাংবাদিকতা রোধ করার লক্ষ্যে গত নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে প্রথমদিকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। এ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৫’শ অনলাইন গণমাধ্যমের কাগজপত্র জমা পড়েছে তথ্য অধিদফতরে।
তথ্য অধিদফতর সুত্রে জানা যায়, ৩১ জানুয়ারি রোববার পর্যন্ত তথ্য অধিদফতরে প্রায় ১৫’শ অনলাইন গণমাধ্যমের প্রকাশকরা তাদের অনলাইন গণমাধ্যমের কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জানুয়ারিতেই সর্বোচ্ছসংখ্যক অনলাইন গণমাধ্যমের কাগজ পত্র জমা পড়েছে অধিদফতরে।
তবে এখনও অনেক অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক ভয় বা অন্যকোনো কারণে তাদের গণমাধ্যমের কাগজ পত্র জমা দেয়নি বলেও বলছে তথ্য অধিদফতর। মূলত এ কারণেই নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে তথ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার মোহাম্মদ ইসহাক হোসেন বলেন, ‘নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে অনেকেই তাদের গণমাধ্যমের কাগজ পত্র জমা দেননি এখনও। কেউ হয়তো ভাবছেন জমা দিলে তাদের কোনো সমস্যা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও জানিনা দেশে কতটা অনলাইন গণমাধ্যম রয়েছে। এটা জানার জন্যই মূলত এই নিবন্ধন কার্যক্রম। নিবন্ধন কার্যক্রমের ফলে অন্তত বলা যাবে যে দেশে কতটা অনলাইন গণমাধ্যম রয়েছে।’
এদিকে জমা হওয়া অনলাইন গণমাধ্যমের কাগজ পত্র অনুযায়ী পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) দিয়ে ওই গণমাধ্যমের অফিস আছে কি না তা যাচাই করা হবে বলে বলছে তথ্য অধিদফতর। যাচাই করার পর ঐ গণমাধ্যম যদি নিবন্ধিত হবার যোগ্য হয় তাহলে তাদেরকে নিবন্ধিত করা হবে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ ইসহাক হোসেন বলেন, ‘একটা ওয়েবসাইট খুলে যারা বাসা থেকে কাজ করেন সেটা অনলাইন পত্রিকা হয়না। আবার আমরা বলছি না যে অনলাইন পত্রিকার অফিস অনেক বড় হতে হবে, আমরা বলছি অবশ্যই পত্রিকার অফিস থাকতে হবে। তবে সেটা ছোট হলেও সমস্যা নেই।’
তথ্য অধিদফতর বলছে, যেসব অনলাইন গণমাধ্যমের অফিস নেই বা প্রতিবেদক নেই তাদেরকে নিবন্ধন দিবেনা তথ্য অধিদফতর। মুলত পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) মাধ্যমে আবেদনকারী প্রকাশকের পত্রিকার সম্পর্কে খোঁজ নিবে তথ্য অধিদফতর।
অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে একটা শৃঙ্খলতার মধ্যে আনতে এ নিবন্ধনের কথা বললেও তবে যে গণমাধ্যমগুলো নিবন্ধিত হবে না বা যাদেরকে নিবন্ধন দেয়া হবে না তাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে এখনও পরিস্কার করছে না তথ্য অধিদফতর।
তবে এ নিবন্ধন করার ফলে সরকারী বিজ্ঞাপনের সুযোগ পেতে পারে অনলাইন পত্রিকাগুলো। এছাড়া যাদের এক্রিডিটেশন কার্ড নেই নিবন্ধন করে আবেদন করলে তারা এক্রিডিটেশন কার্ড পাবে। কিন্তু নিবন্ধন ছাড়া কোনো পত্রিকাকে এক্রিডিটেশন কার্ড দেয়া হবেনা।
সেক্ষেত্রে কোন পত্রিকা কয়টা এক্রিডিটেশন কার্ড পাবে তা ওই পত্রিকার অ্যালেক্সা রেটিং, গুগল অ্যানালিটিক্স, নিজস্ব কনটেন্টের পরিমাণ ও সাংবাদিকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানা যায়।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১১:৫৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬, রোববার
এমআরআর