ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশে পৌষ ও মাঘ এ দু’মাস হচ্ছে শীতকাল। তবে অগ্রহায়ণ মাস থেকে শীতের আবহ সাধারণত দেখা দেয়। এবার পৌষের শুরুর দিকে শীত তেমন একটা না পড়লেও পৌষের মাঝামাঝিতে এসে লঘুচাপের প্রভাবে কিছুটা শীত পড়তে শুরু করেছে।
দেশের শীত প্রবণ জেলাগুলোতে এরইমধ্যে শীত জেঁকে বসেছে। চাঁদপুর জেলায় এখনো শীত সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও তবে কনকনে হিমেল হাওয়া মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি সব বয়সী মানুষ কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) চাঁদপুরে কোথায়ও বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া না গেলেও আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন।
তবে এর আগের দিন জেলার বিভিন্ন স্থানে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের তথ্যমতে চাঁদপুরে এদিন ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফেথাই’-এর প্রভাবে গত কয়েকদিন ঠা-ার প্রকোপ বাড়লেও বর্তমানে এটি লঘুচাপে সৃষ্টি হয়ে বর্তমানে নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিভাগ।
জাতীয় পর্যায়ে আবহাওয়ার সংবাদে বলা হয়েছে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সু-স্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দূর্বল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এরমধ্যে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হতে পারে এবং আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষ রাত থেকে সাকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
চাঁদপুর জেলা আবহাওয়া বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মো. সোয়েব চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘ বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) চাঁদপুরে দিনের বেলা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ ছিলো ১৮.৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রাতে তাপমাতা দুই থেকে তিন ডিগ্রি কমতে পারে।’
মি. সোয়েব জানান, ‘সমুদ্র বন্দর এলাকায় গতকাল (১৮ ডিসেম্বর) ৩ নং সতর্ক সংকেত ছিলো, আজকে সেটি নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তাই লঘুচাপ যেহেতু চলে গেছে তাই দু’একদিনের মধ্যে এ সমস্যা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে গত কয়েকদিন চাঁদপুরবাসী সূর্যের আলো দেখেনি। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠেছে। শীতের ঠা-া কনকনে হাওয়ায় কাজে যেতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষরা।
তবে, জেলা শহরে ও চরাঞ্চলে শীতার্ত মানুষের পাশে এখনো সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে দেশের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো। তখন দেশে ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরের রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর তখন চাঁদপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চাঁদপুরের জন্য সেটিও ছিলো স্মরণকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সে তুলনায় বলতে গেলে এ বছর এখনো চাঁদপুরে শীত পড়েনি।
প্রতিবেদক- দেলোয়ার হোসাইন
১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur