চাঁদপুরের ৩ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন ও হলফনামায় তথ্য গোপন করার অভিযোগে চাঁদপুরের তিন পৌরসভায় (হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ) ৩ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবিতে করা আবেদনও খারিজ করা হয়েছে।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ফলে তিন প্রার্থীর মেয়র পদে প্রার্থীতা বহাল রয়েছে।
তাদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন মেয়র প্রার্থী বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) পৃথকভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসব আবেদন করেন।
বহাল থাকা প্রার্থীরা হলেন, হাজীগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আবদুল মান্নান খান (বাচ্চু), কচুয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাজমুল আলম স্বপন ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মঞ্জিল হোসেন।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আপিল বোর্ডের সদস্য আতাউর রহমান জানান, তিন মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। যার কারণে তাদের প্রার্থিতা বহাল রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরের কচুয়া, হাজীগঞ্জ ও মতলব উত্তরের চেঙ্গারচর পৌরসভায় ৩ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং অফিসার তাদের আপিল আবেদন শনিবার শুনানি শেষে খারিজ করে দিলে মনোনয়নপত্র স্থায়ীভাবে বাতিল হয়ে যায়। তারা হলেন, কচুয়া পৌরসভার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব প্রাঞ্জল, চেঙ্গারচর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সানোয়ারুল আবেদীন ও হাজীগঞ্জ পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শাহবুদ্দিন শাহীন।
এতে করে ছেঙ্গারচর (মতল উত্তর) পৌরসভায় মেয়র পদে সরকারদলীয় প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জর্জ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অর্থ্যাৎ বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। আজ রবিবার রোববার তাকে মেয়র ঘোষণা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল গণমাধ্যমকে জানান, আপিল আবেদনকারী মেয়রদের কাগজপত্র সঠিক ছিল না বিধায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে আলোচিত হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও আপিলে ১মেয়র ও ৫কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। গত ৫ ও ৬ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ উপজেলা ই-সেন্টারে মনোয়নয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে স্থানীয় সরকার পৌরসভা নির্বাচন ২০১০ এর বিধিমালা অনুযায়ী মেয়র প্রার্থীদের ১’শ জন ভোটারের মধ্যে ৮জন ভোটার কম হওয়ায় মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ.কে.এম শাহবুদ্দিনের মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়।
কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে বিধিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথ সংযুক্ত না করার কারণে পৌর ১নং ওয়ার্ড সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হোসেন মোহাম্মদ জামান, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আক্তার হোসেন ও নান্নু মিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় এবং ঋনখেলাপি ও প্রস্তাবকারীর স্বাক্ষর সন্দেহ হওয়ায় এবং প্রস্তাবকারী উপস্থিত না থাকায় ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শাহ আলমের মনোয়নপত্র বাতিল করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের রিটানিং অফিসার মোহাম্মদ আতাউর রহমান।
এদিকে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী হোসেন মোহাম্মদ জামান ও ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নান্নু মিয়া জেলা রিটানিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডলের কাছে আপিল করে তাদের প্রার্থীতা ফিরে পান ।
অপর দিকে একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শাখাওয়াত হোসেন ও আলাউদ্দিন মুন্সি একে অপরের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ আনেন এবং দু’জনের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় দু’প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। যার ফলে একক প্রার্থী হিসেবে নান্নু মিয়া রয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, শাখাওয়াত হোসেন জাল ৮ম শ্রেনী পাশের প্রত্যয়ন সংগ্রহের অভিযোগ এনে নান্নু মিয়ার বিরুদ্ধে হাইকোটে রিটে করার জন্য ঢাকায় রওনা দিয়েছেন। এছাড়াও আপিলে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শাহপরান মজুমদারের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট || আপডেট: ০৪:১০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫, শনিবার
এমআরআর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur