বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল রাম কানাই উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ৪ মে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষকসহ ১০ জন এতে আবেদনের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যথারীতি বিধি মোতাবেক গত ৩ অক্টোবর বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন কোনো ফলাফল ঘোষণা না করে বিদ্যালয়ের সভাপতি পরবর্তীতে মো. আবদুল হককে মনোনীত করেন।
এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে গত ১০ অক্টোবর বিদ্যালয়ে সভার আহবান করেন। ওই সভায় বিষয়টি এড়িয়ে পরবর্তী ১৭ অক্টোবর বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে পরিচালনা পরিষদের সভা হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভূয়া রেজুলেশন সাজিয়ে নিয়োগপত্র প্রক্রিয়া করে।
এতে সভায় অধিকাংশ অভিভাবক সদস্য এ বিষয়ে দ্বিতম পোষণ করা সত্ত্বেও মো. আবদুল হককে নিয়োগের জন্যে রেজুলেশন করা হয়।
দ্বিমত পোষণকারীরা এ সময় উপস্থিত থাকলেও রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। পরিচালনা পর্ষদ একাংশের জোরে গত ১৮ অক্টোবর মোঃ আবদুল হককে নিয়োগপত্র প্রদান করলে তিনি ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
ভূয়া নিয়োগ দেখিয়ে গত ২০ অক্টোবর অভিভাবক সদস্য আলী মুরাদ বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে মামলা করেন। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যবৃন্দ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সফি উদ্দিন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ আলী রেজা আশ্রাফী, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ এর সভাপতি মোঃ হাছান মিয়াজী, অন্যান্য সদস্যবৃন্দ নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল হকসহ মোট ১৮ জনকে বিবাদী করা হয়।
আদালত বিবাদীগণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন। বিবাদীগণ নিয়োগ বোর্ডের ফলাফল বিবরণী পরিচালনা পর্ষদের সভার বিবরণী ও বিবাদীগণের লিখিত জবাব আদালতে জমা দিয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া অভিভাবক সদস্য আলী মুরাদ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সফি উদ্দিনের কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ করেন। উভয় অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ ডিসেম্বর বুধবার বিদ্যালয়ে তদন্তে আসেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শফি উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি অভিভাবক সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের লিখিত মতামত গ্রহণ করেন।
তাদের সবার একই মতামত, এ নিয়োগ অবৈধ। টাকার বিনিময়ে সভাপতি একক ক্ষমতা বলে নিয়োগ করেন। তবে ওই দিন বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ নিয়োগ বোর্ডের তিনজন অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে কথা হয় এলাকার আবদুর রশিদ, কাউছার হামিদ, সোহাগ, রবিউল আলম ও খোরশেদ আলমের সাথে।
তারা বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পছন্দের লোক আবদুল হককে টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়ে বসানোর পায়তারা চালায়। যার ঘোর বিরোধিতা আমরা এলাকাবাসী করেছি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানিক চন্দ্র পাল বলেন, আমি এ নিয়োগের শুরু থেকেই তেমন কোন স্বচ্ছতা দেখিনি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের সকলের লিখিত মতামত নিয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নিবে এর বৈধতা কতটুকু।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সফি উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এসে জেনে গেলাম এবং লিখিত বক্তব্য নিয়ে নিয়েছি, পরবর্তী সিদ্ধান্ত শীঘ্রই জানানো হবে।
জহিরুল ইসলাম জয়, হাজীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট
|| আপডেট: ০৯:১৯ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
এমআরআর