নরসিংদীর পাঁচদোনায় পবিত্র কোরআন শরিফের প্রথম বাংলা অনুবাদক ভাই গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়িতে জাদুঘর নির্মিত হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভারতীয় হাইকমিশনের আর্থিক সহযোগিতায় কাজ শুরু হয়েছে। সংস্কারকাজ করছে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র ‘ঐতিহ্য-অন্বেষণ’। কাজটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে নরসিংদী জেলা প্রশাসন।
ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ, যিনি একাধারে সাহিত্যিক, গবেষক, ভাষাবিদ ও ব্রাহ্মধর্ম প্রচারক হিসেবে সমধিক পরিচিত। ১৯১০ সালের ১৫ আগস্ট তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁর বাড়িটি অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকে।
স্মৃতিবিজড়িত প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো বাড়িটি ও সমাধিস্থল এখন নিশ্চিহ্নপ্রায়। বিভিন্ন সময়ে লেখক, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ, সরকারি, বেসরকারি পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাড়িটি পরিদর্শন করে তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শেষ পর্যন্ত ১০৫ বছর পর ভারতীয় হাইকমিশনের দেওয়া এক কোটি ১০ লাখ টাকার অনুদানে সংস্কারের কাজ শুরু করেছে ‘ঐতিহ্য-অন্বেষণ’। সংস্কারের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে এই নির্মাণকাজ।
ঐতিহ্য-অন্বেষণ ট্রাস্টের সভাপতি ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশনের কাছ থেকে এক কোটি ১০ লাখ টাকা পাওয়া গেছে, (বাড়িটি) বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণ ও জাদুঘরে রূপান্তর করার জন্য। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসন আমাদের সহায়তা করছে। কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাজটা শেষ হয়ে যাবে।’
এত বছরের দাবি পূরণ হতে যাওয়ায় এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
গিরিশ চন্দ্র সেন গবেষক ড. সফি উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন নরসিংদীর উজ্জ্বল আলোকিত সন্তান। আমি তাঁকে প্রমিথিউস হিসেবে উল্লেখ করে থাকি। গিরিশ চন্দ্র নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের ঐতিহ্য আসবে, ইতিহাস আসবে। এই জায়গাটা কেবল উপমহাদেশে নয়, বিশ্বের তীর্থস্থান হিসেবে দাঁড়াবে।’
স্থানীয় লোকজন বলছে, ভাই গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়িটি সংরক্ষণ ও জাদুঘর নির্মাণের ফলে এটা বিশ্বের কাছে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্থান পাবে
নিউজ ডেস্ক ।। ০২:৪০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার
ডিএইচ