Home / বিশেষ সংবাদ / ‘স্যার আমাকে ১০০ টাকা দিয়ে বলে পিল খেয়ে নিস’
স্যার আমাকে ১০০ টাকা দিয়ে বলে পিল খেয়ে নিস

‘স্যার আমাকে ১০০ টাকা দিয়ে বলে পিল খেয়ে নিস’

‘পরের মাসে ১৭ জুন স্যার কোচিংয়ে একা পেয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে আবারও ধর্ষণ করেন। ১৯ জুন স্কুলে গেলে স্যার দপ্তরিকে দিয়ে আমাকে টিচার্স রুমে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর ১০০ টাকা দিয়ে বলে পিল খেয়ে নিস।’

২০১৩ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উল্লিখিত কথাগুলো বলছিলেন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ছাত্রী। ওই দিন স্কুলশিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে আদালতে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন ওই ছাত্রী।

আদালতে ওই ছাত্রী বলেন, ‘পরিমল স্যারের কাছে আমি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের কোচিং করতাম। ২০১১ সালের ২৮ মে আমার কোচিংয়ে যেতে দেরি হয়। ওই দিন স্যার তিনটি চ্যাপ্টার পড়ায়। আমি শেষ চ্যাপ্টারটি পাই। পড়া শেষে স্যার বলে, তুমি বস। ওই দুটি চ্যাপ্টার তোমাকে আলাদা করে পড়িয়ে দেব। এরপর সবাই চলে গেলে পড়ানোর একপর্যায়ে সে হঠাৎ ওড়না কেড়ে নিয়ে আমার হাত বেঁধে ফেলে। ধস্তাধস্তি করে আমাকে বেঞ্চ থেকে মেঝেতে ফেলে দেয়। জোর করে আমাকে বিবস্ত্র করে। এরপর মোবাইল ফোনে ছবি তোলে ও প্রথম দফায় ধর্ষণ করে।’

‘ধর্ষণের পর স্যার বলে, ঠিকমতো পড়াশোনা করো। এ ঘটনা কাউকে বলো না। বললে ইন্টারনেটে তোমার ছবি ছেড়ে দেব। আমার কিছুই হবে না; বরং তোমারই ক্ষতি ও বদনাম হবে। লজ্জা ও ভয়ে আব্বু-আম্মুকে কিছু বলিনি। কোচিংয়ে পড়া চালিয়ে গেছি’, যোগ করেন ওই ছাত্রী।

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় আজ বুধবার। গত ১০ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। মামলার প্রধান আসামি পরিমল জয়ধর শুরু থেকেই কারাগারে আটক রয়েছেন।

মামলাটিতে ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন বিভিন্ন সময়ে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

ওই মামলায় ভিকারুননিসা স্কুলের বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমান ও অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে অব্যাহতির সুপারিশ করে শুধুমাত্র পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মাহবুবে খোদা ।

এর আগে ২০১১ সালের ৫ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা থানায় ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগে মামলা করেন তাঁর বাবা মাহমুদুল হক। মামলা দায়েরের পরের দিন পরিমলকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে তাঁর স্ত্রীর বড় বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৮ মে ওই শিক্ষার্থীকে প্রথমবার ধর্ষণ করা হয়। এ সময় ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে ভিডিও আকারে ধারণ করা হয়। পরে একই বছরের ১৭ জুন আবারও স্কুলছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণ করেন পরিমল।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট: ০৩:২৪ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৫, বুধবার

ডিএইচ