বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় দেশব্যাপী সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত প্রশিক্ষক মৃনাল সরকারের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, ‘চাঁদপুরে আমার সাড়ে ৪ মাসের কর্মজীবনে দেখেছি সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের জন্য চাঁদপুর উর্বর স্থান। এখানে রবীন্দ্র সঙ্গীত সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। সার্কিট হাউজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে গান শোনে দেখেছি শিল্পীদের কার কি গুণ রয়েছে। তাই সাংস্কৃতিক কর্মকা-কে ঘিরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেজন্যে বিজয়ের মাসে সাংস্কৃতিক মাসের আয়োজন করা হচ্ছে। আর এর মাধ্যমে চাঁদপুর থেকে প্রতিভাবন শিল্পীদের বের করে আনা হবে।’
চাঁদপুরের অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, চাঁদপুরে ইলিশ উৎসব করা হচ্ছে কয়েক বছর ধরেই। লোকসঙ্গীত, ভাওয়াইয়াসহ সব সঙ্গীতের চর্চা চাঁদপুরে চলছে। এখন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে এসব সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ দেয়া হলে ভালো শিল্পী সৃষ্টি হয়ে চাঁদপুরের শিল্পীরা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।’
প্রতিযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে যারা এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হবে তারাই জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে চাঁদপুরের সুনাম বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাংস্কৃতিক বিভাগের কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. আবদুল্লাহ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, জেলা সাহিত্য একাডেমীর মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহাসচিব ও ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন-অর-রশীদ।
অনুষ্ঠানটির ২য় পর্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, ‘যেসব সোনামণিরা আজ এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে তারা জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী হয়ে চাঁদপুরের সুমান বয়ে আনবে। যেসব অভিভাবক মনে করেন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে এসব শিশুরা জড়িয়ে পড়ালেখার বিঘœ হচ্ছে, এ ধারণাটা আপনাদের ভুল ধারণা। শিশুরা সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলার মাধ্যমে বেড়ে উঠে। শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি এসব সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। তাহলেই তারা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চাঁদপুরের সুনাম বিশ্বে ছড়িয়ে দেবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুৎফর রহমান, সাহিত্য একাডেমীর মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নির্বাহী সদস্য শহীদ পাটোয়ারী, রোটাঃ মানিক রায়।
২য় পর্বের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নির্বাহী সদস্য শরীফ চৌধুরী।
চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলার ১৬০ জন প্রতিযোগী ১১টি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। ইভেন্টগুলো হলো ঃ দেশাত্মবোধক একক, রবীন্দ্র সঙ্গীত একক, নজরুল সঙ্গীত একক, লোকসঙ্গীত একক। আবৃত্তি ঃ মুক্তিযুদ্ধ ও দেশাত্মবোধক, নজরুল ও রবীন্দ্র এবং শিশুতোষ। সাধারণ নৃত্য একক, উচ্চাঙ্গ নৃত্য একক, একক অভিনয় ও দ্বৈত অভিনয়। এর মধ্য থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ২২ জন প্রতিযোগী জাতীয় পর্যায়ের জন্যে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন স্বপন সেনগুপ্ত, রূপালী চম্পক, মানিক রায়, ইতু চক্রবর্তী, হারুন-অর রশীদ, আবু সালেহ মোঃ আবদুল্লাহ, কাজী শাহাদাত, কাউসার আহমেদ, আক্রাম খান, শহীদ পাটোয়ারী, শরীফ চৌধুরী ও পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
আনোয়ারুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
আপডেট: ১১:৫০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ