Home / চাঁদপুর / ‘ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে অপার সম্ভাবনাময় চাঁদপুর জেলা’
ব্যবসা

‘ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে অপার সম্ভাবনাময় চাঁদপুর জেলা’

চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (CWCCI) আয়োজনে (‘Unlocking Chandpur Economic Potential: Opportunities and Challenges’) চাঁদপুরের বানিজ্য সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।‌ শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান ক্লাবের ল্যাম্বডা হলে এই ব্যবসায়িক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। চাঁদপুরের কৃতি সন্তান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহাবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল বিজনেস সেন্টারের পরিচালক ও অধ্যাপক রাফিউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জনতা ব্যাংকের পরিচালক ড. মোঃ শাহাদাত হোসাইন, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান, উপ-মহাব্যাবস্থাপক ফারজানা আক্তার, ঢাকাস্থ্য চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শাহরিয়ার পলাশ।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর মাকসুদুর রহমান আদনানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (CWCCI) প্রেসিডেন্ট মনিরা আক্তার।

 
প্যানেল মডারেটর ছিলেন ফ্রান্স বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মঈন উদ্দিন মজুমদার, প্যানেল আলোচক ছিলেন জেন্ডার স্পেশালিস্ট নিলুফার করিম, চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির লিমিটেড এর সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক, ওয়িং আ্যপারেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ায়েছ মোহাম্মদ জয়। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ফয়সাল আহামেদ বাহার, ওয়েগা গ্রুপের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন, টোয়াবের ডিরেক্টর জনপ্রিয় উপস্থাপক মোঃ ইউনুছ, পর্তুগালের পর্যটন ব্যবসায়ী সামুন রহমানসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চাঁদপুর উইমেন চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পাপড়ি বর্মন।

সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুর ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা, পর্যটন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অপার সম্ভাবনাময় একটি জেলা। কিন্তু সুচিন্তিত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, পদক্ষেপ অথবা সদিচ্ছার অভাবে এই সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। অথচ নদী ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অনেক জেলায় উন্নত এবং সমৃদ্ধ হয়েছে। তাই চাঁদপুরের পর্যটন ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সুচিন্তিত পরিকল্পনা, ব্যবসা ও পর্যটনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, দক্ষ জনবল তৈরি, অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, চাঁদপুরের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও দেশ এবং আন্তর্জাতিক বাজার সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে নতুন খাত চিহ্নিত করার এখনই উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে নদী বিধৌত জেলা হওয়ায় এখানে যে কোন শিল্পকারখানা গড়ে তোলার উপযোগী চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। এছাড়া চাঁদপুরের নদীশস্য, মৎস্য খাত, কৃষি, মিষ্টান্ন ও বেকারি পণ্য, নদীকেন্দ্রিক পর্যটন খাত তৈরী করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন ছোট বড় ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে, তেমনি অপরদিকে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বক্তারা আরো বলেন, মতলব একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। চাঁদপুর-শরীয়তপুর ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এতে করে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলার সাথে চাঁদপুরে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হয়ে যাচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর এখনই মোক্ষম সময়। ঢাকা শহরের উপর চাপ কমাতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল একটি উপ-রাজধানী করার পরিকল্পনা করছে‌। সেটি হবে ঢাকার পার্শ্ববর্তী কোন জেলা বা উপজেলায়। এক্ষেত্রে অন্যতম উপযুক্ত স্থান হতে পারে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা। আর ছোট্ট একটি ব্রিজ করলে ঢাকার সাথে এই উপজেলার দূরত্ব হবে মাত্র ১ ঘন্টার। তাই এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে চাঁদপুরের মানুষদের কথা বলার অনুরোধ জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল বিজনেস সেন্টারের পরিচালক ও অধ্যাপক রাফিউদ্দিন আহমেদ ব্যবসায়িক খাত, পর্যটন, কৃষি ও নৌ–বাণিজ্যে চাঁদপুরের উন্নয়ন সম্ভাবনার বিভিন্ন দিকতুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং বিস্তারে এবং চাঁদপুরের উন্নয়ন রূপরেখা প্রণয়নে এ সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম/
২৯ নভেম্বর ২০২৫