চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় প্রাথমিক বার্ষিক পরীক্ষা শুরু কাল ১ ডিসেম্বর। মোট পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৫৮ হাজার। শেষ হবে ১২ ডিসেম্বর ২০২৫। ২৯ ডিসেম্বর মা বা অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে এবং ফলাফল বিবরণী মা বা অভিভাবক হাতে পৌঁছে দিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তররের নির্দেশনা রয়েছে। স্ব-স্ব উপজেলা ক্লাস্টারগুলো প্রশ্নপত্র তৈরি করে করে থাকে। চাঁদপুর জেলার ১ হাজার ১শ ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক স্কুল ও ৬শ ১০ টি কিন্ডার গার্টেন রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি বাবত টাকা আদায় করতে পারবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ্।
প্রাপ্ত তথ্য মতে – চাঁদপুর সদরের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ৭শ , হাজীগঞ্জের ১ লাখ ৫১ হাজার ৪শ ৮২ জন , কচুয়ায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯শ ৪০ জন , ফরিদগঞ্জে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫শ ২৩ জন , হাইমচরে ৫১ হাজার ১শ ২০ জন, মতলক দক্ষিণে ১ লাখ ৬৯ হাজার ২শ ৭২ জন , মতলব উত্তরে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪শ ৪২ জন এবং শাহরাস্তিতে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯শ জন শিক্ষার্থী ২০২৫ সালের বার্ষিক বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ ছাড়াও জেলার কিন্ডার গার্টেনগুলোতে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বার্ষিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ৯ টি নির্দেশনা:
১. তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ২০২৪ সালের শিক্ষার্থী মূল্যায়ন নির্দেশিকার আলোকে ৩০% ধারাবাহিক ও ৭০% সামষ্টিক (লিখিত) মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. ১ম ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নেপ এর গাইডলাইন, শিক্ষক সহায়িকা/নির্দেশিকা ও পাঠ্য বইয়ের অধ্যায় শেষের নির্দেশনা মোতাবেক ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং ৫০ নম্বরের ধারাবাহিক মূল্যায়ন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৩. মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের নিকট থেকে কোন ফি গ্রহণ করা যাবে না। মূল্যায়ন সংক্রান্ত (প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র বা খাতা) ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রাপ্ত স্লিপ ফান্ড বা আনুসাংগিক খাত হতে ব্যয় নির্বাহ করতে হবে ।
৪. সময়সূচি সম্বলিত প্রবেশপত্র সকল শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।
৫.আসন বিন্যাস নিশ্চিত করে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং উত্তরপত্রে কক্ষ পরিদর্শকের স্বাক্ষর নিশ্চিত করতে হবে।
৬. পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার সাথে সাথে উত্তরপত্র বা রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে পরীক্ষককে প্রদান করতে হবে।
৭. সঠিকভাবে মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল বিষয় পাল কালিতে ও ইংরেজিতে মার্কিং করতে হবে।
৮. ২৮ ডিসেম্বর এর মধ্যে পরীক্ষকগণ উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে নম্বর ফর্দসহ উত্তরপত্র প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক দৈবচয়নের মাধ্যমে সকল পরীক্ষকের উত্তরপত্র মূল্যায়নের মান যাচাই করে ফলাফল তৈরি করতে হবে এবং বিদ্যালয়ে ফলাফল রেজিষ্ট্রারে সংরক্ষণ করতে হবে।
৯. ২৯ ডিসেম্বর মা/অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা ও প্রোগ্রেসিভ রিপোর্ট কার্ডের মাধ্যমে ফলাফল বিবরণী প্রদান করতে হবে এবং একই দিনে বিদ্যালয়ে ফলাফলের একটি সার সংক্ষেপ সংশ্লিষ্ট উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট দাখিল করতে হবে। পরীক্ষার সময়সূচী ও সকল নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এদিকে সম্ভাব্যূ প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮ জন। কেন্দ্র ২২ টি। এর মধ্যে বালক ৪ হাজার ৯শ ৪৮ জন এবং বালিকা ৮ হাজার ১শ ২০ জন। এবারের সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় দু-তৃতীয়াংশই বালিকা। তবে জেলার ৬শ ১০ টি কিন্ডার গান্টেন ও প্রায় ৪ শ ৫০ টি এবতেদায়ী মাদ্রাসার বৃত্তি পরীক্ষার্থীর তথ্য এর সাথে সম্পৃক্ত হয় নি। হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য বৃত্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ১শ ৭৯ জন। মোট কেন্দ্র ৭টি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রাপ্ত প্রতিবেদনের তথ্য মতে- হাজীগঞ্জ উপজেলা সরকারি নির্দেশনা মতে ৪০ % হারে ১ হাজার ৮শ ৩০ জন । কেন্দ্র- ৩ টি। এর মধ্যে বালক- ৭শ ৩০ জন এবং বালিকা ১ হাজার ১শ জন। শাহরাস্তি উপজেলায় বালক ৪ শ ৮০ জন এবং বালিকা-১ হাজার ৩শ ৪৯ জন। কেন্দ্র ৪ টি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর আবারো ২০০৫ সালে ডিসেম্বরে পূর্বের ন্যায় চালু হতে যাচ্ছে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা।এ বছরের ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে পৃথকভাবে এ বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে অংশ নেবে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীরা। ২০২৫ সালের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, প্রাথমিকে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১-১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিন পর বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।
অপর এক সূত্রে জানানো হয়েছে-জেলায় ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের লক্ষ্যে মোট ১২ লাখ ১৭ হাজার ২৪৭ কপি বইয়ের চাহিদা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে,জেলায় ১ হাজার ১৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এবং এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪ জন। এছাড়া জেলায় ৬১০ টি কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ৭৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
উপজেলা অনুযায়ী বইয়ের চাহিদা : ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য বিভিন্ন উপজেলার বইয়ের চাহিদা নিম্নরূপ- চাঁদপুর সদর: ২ লাখ ৪২ হাজার ৭০০ কপি; হাজীগঞ্জ: ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৮২ কপি; শাহরাস্তি: ১ লাখ ২৩ হাজার ৯০০ কপি; মতলব উত্তর: ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪২ কপি; মতলব দক্ষিণ: ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭২ কপি; ফরিদগঞ্জ:১ লাখ ৮৫ হাজার ৫২৩ কপি; হাইমচর: ৫১ হাজার ১২০ কপি ও কচুয়া: ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪০ কপি।
আবদুল গনি
১ ডিসেম্বর ২০২৫
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur