চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে সড়ক ডিভাইডারের কোল ঘেষে চাঁদপুর ঢাকা রুটে চলাচলকারী পদ্মা পরিবহনের একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাতনি মার্জিয়া আক্তার (৮) ঘটনাস্থলে ও নানি নাজমা বেগম (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে নেওয়ার পথে নাজমা বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ শেরাটন হোটেলের সামনে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মার্জিয়া আক্তার লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার বিঘা গ্রামের কালিবাড়ির মানিক হোসেনের মেয়ে।
নানি নাজমা বেগম চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড় হাজী বাড়ির মনির হোসেনের স্ত্রী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পথিমধ্যে মারা যান।
মার্জিয়ার নানা মনির হোসেন জানান, এদিন রাতে তিনি তার স্ত্রী নাজমা বেগম ও বড় মেয়ের ঘরের নাতনি মার্জিয়াকে নিয়ে হাজীগঞ্জ বাজারে কেনাকাটা করতে আসেন। কেনাকাটা শেষে তারা রাস্তা পার হচ্ছিলেন।
এ সময় ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী পদ্মা পরিবহনের বাসটি দ্রুতবেগে এসে তাদের দুজনকে চাপা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদেরকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মার্জিয়া আক্তারকে মৃত ঘোষণা এবং নাজমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে নেওয়ার পথে নাজমা বেগম মারা যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাজ্জাদ রশিদ ডেবিড জানান, তিনি সড়কের উত্তর পাশে ছিলেন।
মানুষের ডাক-চিৎকার শুনে সড়কের দক্ষিণ পাশে গিয়ে দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে কোলে তুলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তখনো শিশুটি জীবিত ছিল, কিন্তু হাসপাতালের গেটে প্রবেশের সময় শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোরাদ হোসেন ঘাতক বাসটিকে জব্দ করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন। পরর্তীতে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে শিশুটির মরদেহ পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমেদ তানভীর হাসান বলেন, হাসপাতালে শিশু মার্জিয়াকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি এবং নাজমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বাস ও শিশুর মরদেহ পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেট/
২৮ নভেম্বর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur