চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ৫৪ গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহক সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮শ ১১ জন। হতদরিদ্র মহিলা গ্রাহক বিভিন্ন প্রকার ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে। ২ হাজার ৪শ’৭৮ টি কেন্দ্রে ২৩ হাজার ৫শ’৩৮টি দল রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে একক ভাবে কেউ ঋণ গ্রহণের সুযোগ নেই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫শ ৫০ জন কে শিক্ষাবৃত্তি ও ৭১ জন উচ্চ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা ঋণ দেয়া হয়েছে । গ্রাহকগণ ব্যাংকটির মালিক ৯০% । বাকি ১০% অংশ সরকার।
একজন অসহায়,দরিদ্র,তালাকপ্রাপ্তা,বিধবা মহিলা কোনো পেশার হউক না কেন তার নিজ নিজ এলাকার কেন্দ্রের সদস্য পদ লাভ করে ঋণের জন্যে আবেদন করতে হয়। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যে ব্যবসা পরিচালনা কিংবা প্রস্তাবনার উল্লেখিত পেশার খাতে ঋণের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। গ্রামীণ ব্যাংক জামানতবিহীন প্রদত্ত ঋণ ৪৪ কিস্তিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করে থাকে ।
চাঁদপুরের যোনাল অফিসের এক তথ্যে গেলো সপ্তাহে এ পরিসংখ্যান জানা গেছে ।
যে কোনো মুদি দোকান পরিচালনা, ভূমিহীন, নার্সারী, হাঁস-মুরগি ও পশু প্রতিপালন,গরু মোটাতাজাকরণ, রিকসা, ভ্যান, অটোরিকসাসহ যে কোনো পরিবহনের মাধ্যমে আয়, মৎস্য চাষ,সংগ্রামী সদস্যদের ঋণ ও উচ্চ শিক্ষাঋণ প্রভৃতি খাতে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ প্রদান করে। কিস্তি প্রদানের সময় গ্রাহকের ইচ্ছানুযায়ী প্রতি মাসে সঞ্চয় রাখার নিয়ম রয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষা বিস্তারে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু থেকেই কাজ করছে । ৬শ ২৪ জন সংগ্রামী বা ভিক্ষুক সদস্যদের মধ্যে ঋণ দেয়া হয়েছে । চাঁদপুরের প্রায় ৬৮ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে । এ পর্যন্ত ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়েছে ৪শ’৭৭ জন।
‘গ্রামীণ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হলো-অসহায়,গরীব ,ভূমিহীন ,তালাক প্রাপ্তা,বিধবা নারীদের অর্থনৈতিক কাজে তাদেরকে সম্পৃক্ত করে দারিদ্রবিমোচনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা। বিভিন্ন খাতে নারীদেরকে ঋণ দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। খাতের কোনো শেষ নেই। তবে বিশেষ করে নার্সারী,কৃষি, মৎস্য, মুদি ব্যবসা,হস্তশিল্পজাত পণ্য উৎপাদন,বিভিন্ন কুঠিরশিল্প স্থাপন,পল্ট্রীফার্ম পরিচালনা,টেইলারিং,ফলের ব্যবসা ও মৌসমভিত্তিক ঋণ প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে প্রফেসর ড.মুহাম্মদ ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালে একটি প্রয়োগিক গবেষণামূলক প্রকল্প থেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের যাত্রা। পরবর্তীতে ‘ মানুষ ব্যাংকের কাছে যাবেনা;ব্যাংকই মানুষের কাছে যাব ‘- এ মূল লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক কাজ করে। জোবরা গ্রামের নবযুগ তেভাগা খামারটি হলো গ্রামীণ ব্যাংকের আতুরঘর । ১৯৮৩ সালে এর নামকরণ করা হয় গ্রামীণ ব্যাংক । ফলে এ সালেই গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ চালু হয়। সুতরাং তিনি এ ব্যাংকটর প্রতিষ্ঠাতা । মালিক ঋণগ্রহীতাগণ । ৯০ শত্যাংশ তারা মালিক্ । আর সরকার মালিক ১০ শত্যাংশ ।
চাঁদপুরে ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথমে কচুয়ার রহিমানগর বাজারে একটি শাখা চালু হয় । পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে হাজিগঞ্জে ও ১৯৯৪ সালে মতলবে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম চালু হয় । বর্তমানে বিশ্বের ১শ ৭৬টি দেশে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ নভেম্বর ২০২৫
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur