ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল নিরঙ্কুশ জয় অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম তারা এমন সাফল্য পেল।
নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভিপি ও জিএস পদে বিজয়ীদের সঙ্গে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান কয়েক হাজারেরও বেশি। শিবির ডাকসু জেতার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে বিষয়টি, সেটি নারীদের পোশাক ও কট্টর ইসলামিক পন্থার দিকে ধাবিত হওয়ার শঙ্কা।
অনেকে বলছেন, শিবিরের বিজয়ের পর স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে এসব ভাবনা ও শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম বললেন,‘কারো স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’
সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন সাদিক কায়েম। শিবিরের মাঝে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত নেতৃত্ব খুঁজে পেয়েছেন নারীরা— এমনটা উল্লেখ করে সাদিক কায়েম বলেন,‘নারীরা যে নেতৃত্ব চান, সে নেতৃত্ব আমাদের জোটের মধ্যেই তারা খুঁজে পেয়েছেন।
তাই তারা আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি মাল্টিকালচারাল প্রতিষ্ঠান। এখানে স্বাধীনতা সীমিত করার কোনো সুযোগ নেই। হিজাব পরা শিক্ষার্থীর যেমন অধিকার আছে, তেমনি নন-হিজাব বা আধুনিক পোশাক পরা শিক্ষার্থীরও সমান অধিকার আছে।
পোশাকের পছন্দ,ব্যক্তিগত পরিচয় বা প্রতীক নিয়ে কাউকে হেয় করা, হস্তক্ষেপ করা কিংবা কোনো সিম্বলকে অপরাধী করা—এসব একেবারেই চলবে না। যার যে অধিকার,যে চয়েস, যে রুচি—সে তাই করবে এবং তার স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে শিবির উল্লেখ করে সাদিক কায়েম বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে যে প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছিল, তা ভেঙে গেছে। নারীর অধিকার, তাদের সুরক্ষা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি আমরা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দিয়ে আসছিলাম,বিগত সময়ে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতে দেওয়া হয়নি। তবে জুলাই বিপ্লবের পর এক বছর ধরে আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি এ প্রতিশ্রুতি কেবল মুখের কথা নয়।
নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা পর্যন্ত আমরা থামব না— এটাই আমাদের স্লোগান। আমাদের ইশতেহারে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকারকে কেন্দ্র করে একাধিক দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানে পরিকল্পনা নিয়েছি এবং শিগগির এসবের বাস্তবায়ন শুরু হবে।’
বিভাজনের রাজনীতি নয়, বরং সব শিক্ষার্থীর পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সাদিক কায়েম বলেন, “এখানে বিভাজন বা ‘অন্যকরণ’(Othering) চলতে পারে না। যেকোনো হলের শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়লে আমরা পাশে থাকব। আমাদের পরিচয় একটাই—আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কাজের মাধ্যমেই আমরা আস্থা অর্জন করতে চাই।”
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এ জি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur