Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / কালভার্টে সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সাঁকোই ভরসা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী
কালভার্টে

কালভার্টে সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সাঁকোই ভরসা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার বাগবাড়ী ও জীবগাঁও জেনারেল হক হাইস্কুল এন্ড কলেজের সীমানায় খালের ওপর নির্মিত কালভার্টটির সংযোগ সড়ক না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও পৌর এলাকার ছেংগারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত কালভার্ট, ডাইয়াখোলা গ্রামের খালের উপর নির্মিত কালভার্টের একই অবস্থা হয়ে আছে।

ছেংগারচর পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাথে দীর্ঘদিন ভেঙে পড়ে থাকা এই কালভার্টটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ছেংগারচর পৌর প্রশাসন। তবে নির্মাণ শেষ হওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও দুই পাশের এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ না করায় স্থানীয়দের দুর্ভোগ বেড়েছে বহুগুণ।

এই কালভার্ট দিয়ে জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জীবগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জজ আইডিয়াল কিন্ডারগার্ডেনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বাগবাড়ি, রুহিতারপার, ডেংগুরভিটি, ডাইয়াখোলা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বর্তমানে কালভার্টটির দুই পাশে মাটির ভাঙনে জীবগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাগবাড়ি জামে মসজিদ হুমকির মুখে রয়েছে।

ছেংগারচর পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের আওতায় লোকাল গভ: কোভিড-১৯ রেসপন্স এ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্ট (এলজিসিআরআরপি) এর অধীনে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় আরসিসি কালভার্টটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিলো মামুন এন্ড নুরজাহান (জেবি)। প্রকল্প অনুযায়ী, কালভার্টেিটর দুই পাশে ১০ মিটার করে এপ্রোচ সড়ক এইচবিবিকরণের চুক্তি হলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

কালভার্ট দিয়ে পারাপারের জন্য স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। কয়েকদিন আগে ওই সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় এক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থী পিছলে পড়ে মারাত্মক আহত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয়রা দ্রুত সময়ের মধ্যে এপ্রোচ সড়ক সংস্কার করে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য পৌর প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কালভার্টটির দুই পাশে মাটি না থাকায় গরু-বাছুর নিয়ে বের হতে পারছি না। এমনকি জমির ফসল বাড়িতে আনতেও খুব কষ্ট হচ্ছে।

জীবগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুরভী আক্তার বলেন, রাস্তা ঠিক না থাকায় আমাদের এক কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে আসতে হয়। এতে অনেক কষ্ট হয়। তাই দ্রুত রাস্তা সংস্কার প্রয়োজন।

জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার ও মোঃ মাহিব জানান, ব্রিজটি সাত মাস আগে নির্মাণ হলেও দুই পাশে রাস্তা মেরামত হয়নি। প্রতিদিন স্কুলে আসতে অনেক কষ্ট হয়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল বাসার বলেন, দ্রুত রাস্তার মাটি ভরাট না করলে যেকোনো সময় আমাদের স্কুলটি ভেঙে খালে চলে যেতে পারে।

জিবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেনও দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ছেংগারচর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, কাজের অগ্রগতি তদারকি করা হচ্ছে। খুব শিগগির এপ্রোচ সড়ক সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হবে।

ছেংগারচর পৌরসভার প্রশাসক মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি ঠিকাদারকে দ্রুত মেরামতের জন্য বলেছি। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক/ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫