Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১৪ হাজার মে.টন
rice-...
ফাইল ছবি

চাঁদপুরে ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১৪ হাজার মে.টন

চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় ২০২৪-’২৫ বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ হাজার ৭শ ৩৬ মে.টন। এর মধ্যে ধান হলো ৪ হাজার ৩শ ৭০ মে.টন এবং ৯ হাজার ৪শ ৬৬ মে.টন্। চাঁদপুরের মান্যবর জেলা প্রশাসক মোহসীন উদ্দিন আজ মঙ্গলবার সকার সাড়ে ১০ টায় বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

২৪ এপ্রিল ২০২৫ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত ক্রয় অব্যাহত থাকবে বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে ৫ মে ২০২৫ এ তথ্য জানা গেছে। এ সব ধান-চাল ক্রয়ে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা দিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছিল।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, চলতি বোরো মৌসুমে সরকার জেলার ৫টি উপজেলা থেকে এ্যাপসের মাধ্যমে বা সরাসরি উপজেলা কৃষি অফিসের তালিকাভূক্ত কৃষক ও কাছ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান এবং জেলার অনুমোদিত ১৩ জন মিলারের কাছ থেকে ৪৯ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় করবে। যা ৩১ আগস্ট ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্রয় করার সর্বশেষ তারিখ।

প্রাপ্ত তথ্য মতে- চাঁদপুর সদরে ৩শ ৮১ মে.টন, মতলব দক্ষিণে ৬ শ ৮১ মে.টন, মতলব উত্তরে ৩শ ৬ মে.টন , হাজীগঞ্জে ৬শ ৬৯ মে.টন,শাহরাস্তি ৭শ ৪ মে.টন , কচুয়ায় ৮শ ৯৮ মে.টন, ফরিদগঞ্জে ৬শ ৮৪ মে.টন এবং হাইমচরে ৪৭ মে.টন ধান ক্রয় করার সরকারি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস জানায় ‘সরকারি নির্দেশিত নিয়মে জেলা-উপজেলা কমিটি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান এবং নিবন্ধিত মিলারের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করে থাকে।’

৮ উপজেলায় আটটি উপজেলা কমিটি এবং চাঁদপুর জেলায় একটি জেলা কমিটি রয়েছে। উপজেলা কমিটি সরকারি নির্দেশনা মতে প্রতি বছরই ধান ও চাল সংগ্রহ করে থাকে ।

এদিকে চাঁদপুর দেশের অন্যত্তম কৃষিভিত্তিক অঞ্চল। চাঁদপুরের জরবায়ূ কৃষি উৎপাদনে সহায়ক। মেঘনা,ডাকাতিয়া,মেঘনা-ধনাগোদা ও পদ্মা নদী বিধৌত এ চাঁদপুর। চাঁদপুর জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। জেলার ৪টি উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন নদীভাঙ্গনগ্রস্থ,নদীবিধৌত ও নদীসিকস্তি। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা ধনাগোদা নামে দু’টি সেচ প্রকল্প রয়েছে।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ বছরে চাঁদপুর জেলায় ৬৩ হাজার ৯শ ৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২ লাখ ৭৯ হাজার ২শ ১৮ মে.টন চাল। এবার এককভাবে উন্নত ফলনশীল ৪৯ হাজার ৬ শ ৬০ হেক্টর চাষাবাদ এবং হেক্টর প্রতি ৪১০ মে.টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ১শ’ মে.টন। হাইব্রিড ১৪ হাজার ৩ শ ২০ হেক্টর চাষাবাদ এবং হেক্টর প্রতি ৪৯৫ মে.টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৮শ’ ৪৫ মে.টন ।

প্রাপ্ত পরিসংখ্যান মতে-উপজেলাওয়ারী চাঁদপুর সদরে আবাদ ৫ হাজার ৬শ ৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১শ ৬৯ মে.টন্। মতলব উত্তরে আবাদ ৯ হাজার ৯শ ৮৪ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ হাজার ৪ শ ৮২ মে.টন্। মতলব দক্ষিণে আবাদ ৪ হাজার ৮ শ ৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার ২শ ৭৩ মে.টন। হাজীগঞ্জে আবাদ ৯ হাজার ৬শ ২১ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪২ হাজার ৪ শ ৭০ মে.টন্। শাহারাস্তিতে আবাদ ৯ হাজার ৮শ ৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ হাজার ৭ শ ৫১ মে.টন ।

কচুয়ায় আবাদ ১৩ হাজার ২শ ২৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৩শ ৪১ মে.টন্। ফরিদগঞ্জে আবাদ ১০ হাজার ৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ হাজার ১শ ৯৩ মে.টন্ । হাইমচরে আবাদ ৬ শ ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫শ ৫০ মে.টন। উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চাঁদপুররে ৮ উপজলোয় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২০২৪-২৫ র্অথবছরে ২৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংকের এক তথ্যে জানা গেছে।

কৃষিবিভাগের একজন কর্মকর্তা দাবি করে বলেন, ‘ এবার চাঁদপুরে বাম্পার বোরো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । নিরব্চ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল থাকায় এটা সম্ভব বলে ঐ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।’

tk-

প্রসঙ্গত, চাঁদপুে জেলা কৃষি পরিবেশ অঞ্চল ১০,১৬,১৭,১৯ এর আওতাভুক্ত। জেলার বর্তমান ফসলের নিবিরত ১৯১%। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নামে দুটি প্রকল্প জেলার ৪ উপজেলা সদর,ফরিদগঞ্জ,মতলব উত্তর,হাইমচরে ২৩ হাজার ৩ শ’৯০ হেক্টর জমি রয়েছে। চাঁদপুর জেলার চারটি উপজেলা যথা- চাঁদপুর সদর,হাইমচর, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ২৩ হাজার ৩ শ’৯০ হেক্টর জমি রয়েছে এ দুটোতে। জেলার খাদ্যের প্রয়োজন ৪ লাখ ২২ হাজার ৯শ ৫৫ মে.টন।

চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০২৪-’২৫ অর্থবছরে ইরি-বোরো চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৯০ হাজার মে.টন চাল নির্ধারণ করা হয়েছে বলে চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল এ ৩ জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়ে থাকে। চাঁদপুর সেচ ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জে ব্যাপক ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়।

আবদুল গনি
৫ মে ২০২৫