চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। প্রতি সপ্তাহে মাত্র একদিন মিলছে চিকিৎসাসেবা। আবার অনেক সময় সপ্তাহে একদিনও মিলছেনা সে চিকিৎসাসেবা। যেখানে সরকারি ছুটির দিন ব্যধিত প্রতিদিন নিয়মিত গ্রামের সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা। সেখানে নিয়মিত দায়িত্ব পালন না করার কারনেই এমন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। আর ওই তিনটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হলো- মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাঁদের গাও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র , মতলব দক্ষিন (সদর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র এবং উপাদী দক্ষিন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র।
খবর নিয়ে জানা গেছে, এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গুলো নিয়মিত খোলা হয়নি। সপ্তাহে দু, একদিন খুললেও সেখানে কোনো প্রকার ডিপ্লোমা চিকিৎসক থাকেনি। তাই যা হবার তাই হচ্ছে। গ্রামের সাধারণ মানুষজন নিয়মিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেক গ্রামবাসির অভিযোগ রয়েছে যে, শুধু চিকিৎসাসেবা থেকেই বঞ্চিত হয়নি তারা। ঠিকমতো তেমন কোনো ঔষধ ও পাননি এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গুলো থেকে।
কয়েকদিন পূর্বে মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নে সরজমিনে দেখা গেছে, বেলা সাড়ে ১১ টায় মতলব দক্ষিন উপাদী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে। খবর নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। প্রতি সপ্তাহে একদিন বা দু,দিন খোলা হয়। তাও সেটি দুপুর ২টার আগেই আবার বন্ধ হয়ে যায়।আর সেখানে লোকবল এবং চিকিৎসক সংকটের কারনেই এমন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ এমনটাই জানিয়েছেন চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, যেখানে ৫জন ভিজিটর থাকার কথা। সেখানে আমাদের অধিকাংশ পদ গুলো শূন্য। যেমন পরিবার পরিকল্পনা ভিজিটর থাকার কথা ৩ জন। সেখানে আমাদের আছে ১ জন। পরিবার পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আছেন ১ জন। পরিবার কল্পনা সহকারী ৬ জনের স্থলে পদে রয়েছেন ৩জন। তার মধ্যে ১জন কয়েক মাসের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। আয়া ১জন শূন্য পদ, এম এল এস এস ১ জন সেটিও শূন্য পদ। এতগুলো পদ থাকা সত্বেও শুধুমাত্র ৩ জন করে দায়িত্ব পালন করেন।
স্থানীয় এলাকার হাসিম বেপারী, রশিদ খান, তাজুল ইসলাম, হাবিব সহ একাধিক ব্যক্তিরা বলেন, আমাদের এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি গত কয়েক বছর ধরেই এভাবে রয়েছে। বহু বছর আগে একসময় এখানে নিয়মিত ডাক্তার ছিলো। স্টাফ কোয়াটারে ডাক্তার থাকতো। আমরা তখন অনেকটাই ভালো সেবা পেয়েছি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এটি নিয়মিত না খোলার কারনে আমরা ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাইনি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রতি সপ্তাহে রোববার অথবা বৃহস্পতিবার খোলা হয়। তাও তারা দুপুর দুইটার আগেই আবার বন্ধ করে চলে যায়। তারা আরো বলেন, আমরা তো ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাইনি। এছাড়া তেমন কোনো ঔষধ বরিও স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে দেয়া হয়নি। আমরা গ্রামের মানুষরা চাই এটি আবার আগের মতো নিয়মিত খোলা রেখে গ্রামবাসিকে চিকিৎসেবা প্রদান করুক।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেহেদী আল মাসুম জানান, লোকবল সংকটের কারনেই কয়েকটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এমনটা হচ্ছে। মতলব দক্ষিনে মোট ৮টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ৩ টিতে দায়িত্বে কোন লোক নেই। এজন্য সপ্তাহের প্রতি রোববার একজন ডাক্তার সেখানে গিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। আমাদের শূন্য পদগুলোতে লোক নিয়োগ করা হলে হয়তো এই সমস্যা গুলো সমাধান হবে।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি, ৫ জানুয়ারি ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur