সর্বজনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক,চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সাবেক চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান (৮২)। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে তার মরদেহ আনা হলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দ মরদেহ শেষবারের মতো দেখার জন্য ছুটে আসেন। এসময় ক্লাবের আয়োজনে শোকসভা,স্বারণসভা, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। যোহরবাদ চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তার মরদেহ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খানকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা আসেন । জানাজায় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে পর্যায়ক্রমে চাঁদপুর প্রেসক্লাব, চাঁদপুর সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খানের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব, চাঁদপুর সরকারি কলেজ ,চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা, কলেজ শিক্ষক পরিষদ, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট চাঁদপুর জেলাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
চাঁদপুর শহরের চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খানের ছোট ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ফেরদৌস খান শাওন বলেন, আমার বাবার সাথে আপনারা দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন। তাকে চেনেন। বাবা আমাদের থেকে আপনাদের বেশি সময় দিতেন। বাবা যদি কোনো ভুল করে থাকেন তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ তাকে যেন জান্নাতবাসী করেন। সকলে দোয়া করবেন।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত বলেন, সকলকেই একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সকল দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করতে পারি আল্লাহ পাক উনাকে বেহেস্ত নসিব করবেন। আমি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানাই।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত আরও বক্তব্যে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান , চাঁদপুর কলেজের সাবেক ভিপি আক্তার হোসেন মাঝি,সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম আবদুল মান্নান, অ্যডভোকেট সেলিম আকবর,প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, এএইচএম আহসান উল্লাহ ,সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, জিএম শাহীন, আল ইমরান শোভন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলম পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদ আলম, এমএ লতিফ প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,মোহাম্মদ হোসেন খান জেলার ফদিরগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি গ্রামের খান বাড়ির ইউসুফ খানের ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী ও দুই ছেলে, ৪ ভাই, বোনসহ বহু আত্মীয় স্বজন রয়েছে। তিনি দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও প্রখ্যাত চিত্র শিল্পী হাসেম খানের ছোট ভাই। কর্মজীবনে চাঁদপুর শহরের ব্যাংক কলোনির নিজ বাড়িতে থাকতেন। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসারত ছিলেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজে রাস্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৭ নভেম্বর ২০২৪