দেশে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯ শ ৭৭ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮ শ ২১ কোটি টাকার ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত বলে জানা গেছে। রোববার ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তথ্যে বলা হয়, গত জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩শ ৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫শ ৮৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১শ ১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮শ ৬ কোটি টাকা,যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২শ ৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮শ ১৩ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়,আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন যা স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল। ভবিষ্যতে এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। কারণ বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য প্রণীত নীতিমালাগুলো এখনো বিদ্যমান রয়েছে। যার সুফল ভোগ করছে একটি শ্রেণি। অতিরিক্ত সুবিধা দিয়ে যে ঋণগুলো নিয়মিত রাখা হয়েছে এ সুবিধা তুলে ফেললে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানা যায়।
অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ তারা ধারণা করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল; কিন্তু সরকার পতনের পর এ ঋণের একটি অংশ খেলাপিতে পরিণত হবে বলে খাত সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেন। তারা জানান,শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন,অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এ প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেয়া হয়েছে,ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৪
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur