দেশের প্রায় ৫০ লাখ শিশু বিভিন্ন পর্যায়ের কিডনি রোগে ভুগছে। এসব রোগীর মধ্যে আড়াই লাখ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগের আগত শিশু রোগীদের প্রায় ৫ % কিডনির সমস্যা নিয়ে আসে। শিশুর কিডনি বিকল রোগে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপি ওই সম্মেলনের শেষ দিন ছিল।
ডা.এম আর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট আয়োজিত‘ দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক আইপিএনএ সমর্থিত শিশুদের কিডনি বিকল ও দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস পিডিকেআইডিএস ২০২৩’-শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন বাংলাদেশ,ভারত,সিঙ্গাপুর,থাইল্যান্ড,নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের দু’শতাধিক চিকিৎসক ও নার্স।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন,‘নজরদারি না থাকায় কিডনি রোগীর সংখ্যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে কিডনিজনিত সমস্যায় প্রায় দু’কোটি রোগী থাকতে পারে। যাদের মধ্যে ৫০ লাখ শিশু। জন্মগত সমস্যা, ডায়রিয়ার পরে কিডনি বিকল হওয়া,নেফ্রাইটিসের প্রদাহ শিশুদের কিডনি রোগের প্রধান কারণ।
ডায়রিয়ার কারণে শিশুদের কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ২৯ % বেশি । ‘
সম্মেলনের প্রথম দিনে মৌলিক পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস,কিডনি বিকল হলে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের ভূমিকা,ডায়ালাইসিস প্রক্রিয়া এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়ভিত্তিক আলোচনাসহ একাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের ওপর আলোচনা হয় সম্মেলনের দু’দিনে। ড.শারমিন আফরোজ ও ড.শেখ ফারজানা সোনিয়া সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন ডা.এম আর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুন নাহার। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক পরিচালক অধ্যাপক খাদিজা রহমান।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন—প্রশিক্ষণ কোর্সের পরিচালক অধ্যাপক আজমেরি সুলতানা,প্রশিক্ষণ কোর্সের কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপক নব কৃষ্ণ ঘোষ,পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আফরোজা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন—সম্মেলনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ,কোর্সের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ।
আরও উপস্থিত ছিলেন—ইনস্টিটিউটের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন। সম্মেলনে ভারতের অধ্যাপক আর এন শ্রিভাস্তাভা,সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক ইয়াপ হুই কিম,বাংলাদেশের অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ,অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহিদুল্লাহ ও অধ্যাপক নাজমুন নাহারকে আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সম্মেলনের আয়োজক ও কোর্সের পরিচালক অধ্যাপক আজমেরি সুলতানা বলেন,‘এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য কিডনি রোগে শিশুর মৃত্যুর হার কমানো। এ প্রশিক্ষণের ফলে চিকিৎসক,নার্সরা প্রাথমিকভাবে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসে আরও দক্ষ হবেন। এতে করে শিশুমৃত্যুর হার কমে আসবে।’
১ নভেম্বর ২০২৪
এজি