আজ পবিত্র আশুরা এ দিনটি মুসলিম জাহান শোকের দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। কারবালা প্রান্তরে এজিদ সেনাবাহিনী পাঠিয়ে ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার পরিবারবর্গ এবং সঙ্গী-সাথীদের হত্যা করে। ফোরাত নদীর কূল আটকে দিয়ে পিপাসার্ত নর-নারী-শিশুদের করুণ হত্যাকান্ডের স্মরণে ১০ মহরম বা পবিত্র আশুরা পালন করা হয়।
এ পবিত্র দিনটি শোক দিবস হিসেবে পালন করার সঙ্গেই আমরা সমধিক পরিচিত। আশুরার তাৎপর্য ও পবিত্রতার প্রধান কারণগুলো ইসলামের বিভিন্ন ঘটনাবলি থেকে অর্জিত হয়েছে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.)-এর কাছে প্রথম অহি নিয়ে ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) পৃথিবীতে এসেছেন এ পবিত্র দিনে । পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব আদম (আ.) এ দিনেই জন্মলাভ করেছিলেন।
মহানবী (স.) কর্তৃক ইসলাম প্রচারের অনেক আগে থেকেই পবিত্র আশুরা পালিত হয়ে আসছে। পবিত্র আশুরাকে ঘিরে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয়েছে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা। এ মর্মান্তিক ঘটনার কারণেই পবিত্র আশুরা পালনের মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর একটা বড় কারণ হলো, ধর্মের নাম করে অধর্ম ও অন্যায়ের অশুভ শক্তি সেদিন ইসলামের সত্যবাণী ও ন্যায়-ধর্মকে আঘাত করেছিল। নিয়েছিল প্রতারণার আশ্রয়।
আজকের দিনে যখন এদেশে পবিত্র আশুরা পালন করছি,। তখন ধর্মের নামে এক ব্যাপক অধর্ম ও অসত্যকে আশ্রয় করে দেশ এবং সমাজজীবন বিষবাষ্পে আচ্ছন্ন করতে উদ্যত।
আজ যারা ধর্মের নাম করে সংকীর্ণতা ও ঘৃণা ছড়ায় তারা কারবালা প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) দৃঢ়তা, সততা, ধৈর্য ও ধর্মনিষ্ঠা থেকে কিছুই শিক্ষা পায়নি।
পবিত্র আশুরার এ দিনটি বহু প্রাচীনকাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। তারপর সত্য-ধর্ম ইসলামের কঠিন এক অগ্নিপরীক্ষার মুহূর্ত এই দিনটিতে সংযোজিত করেছে এক নতুন ও মহান মাত্রা। তা হলো ত্যাগ, দুঃখ ও বেদনার মধ্য দিয়ে এবং আত্মাহুতির মাধ্যমে ন্যায়-ধর্মকে উচ্চে তুলে ধরার দীক্ষা, যা আজ সমগ্র মুসলিম জাহানের অনুপ্রেরণার উৎস।
পবিত্র আশুরার এ শোক দিবসের শিক্ষা হলো অত্যাচারের কাছে মাথানত না করা, মিথ্যার কাছে নতিস্বীকার না করা। তাই হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাতবরণ একই সঙ্গে শোক ও গৌরবের সমাচার। তার ত্যাগের গৌরব সমগ্র মুসলিম জাহানের অন্তরকে উদ্ভাসিত করুক ।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০২:৫০ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৬, বুধবার
এজি/ডিএইচ