পৌরসভা নির্বাচনের আগে নতুন কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সুযোগ দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলীয় পরিচয়ে জানুয়ারিতে পৌর নির্বাচন হলে অংশ নিতে পারবে না ইসিতে অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো। তাই দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী এবং প্রতীক না দিতে পারায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও প্রার্থীর সংখ্যা কমতে পারে। আর এতে বাড়তে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নতুন করে আবেদন করার সুযোগ এখন দেয়া হবে না। কারণ পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন। তাই আপাতত এসব চিন্তা তারা করছেন না। তিনি বলেন, বিদ্যমান নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো এ নির্বাচনে সরাসরি প্রার্থী দিতে পারবে। আর অনিবন্ধিত দল এবং সম্ভাব্য আগ্রহী ব্যক্তিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াতে কোনো বাধা নেই।
প্রসঙ্গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দল নিবন্ধনের সুযোগ দেয় ইসি। এখন থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও রাজনৈতিক পরিচয়ে এবং দলীয় প্রতীকে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পিপলস লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুব হোসেন বলেন, এটি ইসির একটি হটকারী সিদ্ধান্ত। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে আমরা পৌরসভার নির্বাচনে অংশ নিতে পারব না।
বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শওকত হোসেন মিয়া বলেন, ইসি সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। তাই অন্য দলকে এ নির্বাচনের বাইরে রাখতে চাচ্ছেন তারা। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদার সময়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির মতো চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়। এতে কিছু শর্ত জুড়ে দেয়ার কারণে তৃণমূলে সাংগঠনিক সক্ষমতা থাকা দলগুলো ছাড়া নামসর্বস্ব অনেক দল নিবন্ধন থেকে ছিটকে পড়ে। এর মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনেও তারা অযোগ্য হয়।
ওই সময়ে আওয়ামী, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ৪১টি দল নিবন্ধনের যোগ্যতা অর্জন করে। তারা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে বর্তমানে একাত্তরে মানবতা্বিরোধী অপরাধে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতার বিচার চলছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে। এ অপরাধে ইতিমধ্যে দলটির দুইজন নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ইস্যুতে রাজনীতিতে আপাতত দলটি নিষিদ্ধ। তাই তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়াও স্থগিত করেছে ইসি।
তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি চলমান থাকায় শর্তপূরণ করে বিভিন্ন সময়ে আবেদন করা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নিবন্ধন পেয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানের।
এছাড়া আরো প্রায় ৪১টি রাজনৈতিক দল ইসিতে আবেদন করেছে। নতুন কয়েকটি দলও নিবন্ধনের আবেদন করার জন্য ইসিতে ধরনা দিচ্ছে। কিন্তু একাদশতম সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে না আসায় এ পথ উন্মুক্ত করছে না ইসি। এরই মধ্যে নির্দলীয় স্থানীয় নির্বাচন ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে এখন থেকে দলীয় পরিচয় এবং ব্যানারে তৃণমূলের এ নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় মন্ত্রিপরিষদ চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দিয়েছে। এরপর পুরনো আবেদন করা দলগুলোর পাশাপাশি নতুনভাবে নিবন্ধনের আবেদন করতে সংশ্লিষ্টদের ইসিতে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে।
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৩:৫২ পিএম ২২ অক্টোবর, ২০১৫ বৃহস্পতিবার
ডিএইচ