Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে ২শ’ মে.টন বোরো ও ৮ মে.টন সরিষা বীজ বরাদ্দ : ১৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা
Agriculture....-620x330

চাঁদপুরে ২শ’ মে.টন বোরো ও ৮ মে.টন সরিষা বীজ বরাদ্দ : ১৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা

চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় চলতি ২০২৪-২৫ বছরের রবি মৌসুমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগাম চাষাবাদের জন্যে ২শ মে.টন বোরো ও ৮ মে টন সরিষাবীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বীজগুলো সরকারি নির্দেশিত মোড়কে পাওয়া যাবে। জেলার সব উপজেলার ১২৮ জন ডিলারের মাধ্যমে এসব বীজ স্ব স্ব উপজেলার হাট-বাজারে ইতোমধ্যেই পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ খামার বাড়ি,চাঁদপুরের বীজ সরবরাহ কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো.খায়রুল বাশার ২২ সেপ্টেম্বর আমাদের এ প্রতিনিধিকে এ তথ্য জানান।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, স্ব-স্ব উপজেলার হাট-বাজারের অনুমোদিত ডিলারগণ এ বীজ কৃষকগণের নিকট বিক্রি করবে বলে চাঁদপুর বীজ বিতরণ কেন্দ্র জানান। বিত্রডিসির জেলা বীজ সরবরাহ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (বীজ) বলেন,‘চাঁদপুরে বরাদ্দের বীজ ইতোমধ্যেই পৌঁছা শুরু হয়েছে। ডিলারদের মধ্যে বিতরণ চলছে। প্রতিটি প্যাকেটে নির্ধারিত মূল্য সংযোজন করা হয়েছে। ক্রয়ের সময় কৃষকবন্ধুদের তা’দেখে নিতে তিনি অনুরোধ জানান্। কৃষক সরসরি বীজ কেন্দ্র থেকে সরকারিভাবে বেঁধে দেয়া মুল্যে ক্রয় করতে পারবে।’

এদিকে বন্যাত্তোর পুর্নবাসন কল্পে ও উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত জেলার সকল উপজেলার ১৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে । চলমান রোপা আমন চাষাবাদের জন্যে ১০ হাজার স্ব স্ব উপজেলার তালিকাভুক্ত কৃষককে ৫ কেজি করে বীজ ধান , ১০ কেজি করে ডিএফপি সার , ১০ কেজি করে এমওপি সার,ও নগদ ১ হাজার টাকা করে বিকাশে প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর, খামার বাড়ি চাঁদপুরের সংশ্লিষ্ঠ কৃষিবিদ মো.মোবারক হোসেন ২২ সেপ্টেম্বর এ তথ্য জানান।

তিনি আরো জানান, বসতবাড়িতে উচুঁ স্থানে শাক-সবজি চাষাবাদে ৫ হাজার কৃষককে বিভিন্ন উন্নত জাতের শাক-সবজির বীজও প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হবে। উপজেলা কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত কৃষকগণ এ সুবিধা পাবেন। এবারের বন্যায় চাঁদপুরের ৪৭ হাজার ৬শ ৮৪ জন কৃষক কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাই কৃষকগণের কথা ভেবে কৃষিবিভাগ প্রাথমিক ভাবে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে ঔ কৃষিবিদ জানান।

প্রসঙ্গত , ২৫ লাখ জনসংখ্যা অধ্যূষিত চাঁদপুর জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবি। ধান,গম, আলু, সরিষা পাট,সয়াবিন, আখ, অভিন্ন শাক-সবজি চাঁদপুর জেলার প্রধান ফসল। কৃষি পরিবেশ অঞ্চল ১০,১৬,১৭,১৯ এর আওতাভুক্ত। জেলার বর্তমান ফসলের নিবিরত ১৯১%। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নামে দুটি প্রকল্প জেলার ৪ উপজেলা সদর,ফরিদগঞ্জ,মতলব উত্তর,হাইমচরে ২৩ হাজার ৩ শ’৯০ হেক্টর জমি রয়েছে। জেলায় ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪শ ৮৯টি কৃষি পরিবার রয়েছে।

জেলার খাদ্যের প্রয়োজন গড়ে ৪ লাখ ১২ হাজার মে.টন। বিগত দিনে খাদ্য ঘাটতি ছিলো। উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি চালুকরণ ও আধুনিকতার আবাদের মাধ্যমে বর্তমানে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে ৪ লাখ মে. টন। খাদ্য উৎপাদনে সরকার বিদ্যুৎ ও সার ভত’র্কি এবং ব্যাংকগুলো সহজ শর্তে কৃষিঋণ বিতরণ করছে।

গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও কৃষকের উদ্ভাবিত নিজস্ব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সীমিত সম্পদ কাজে লাগিয়ে ও বিশেষ বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণের ফলে কৃষকের আর্থিক দৈন্যতা ক্রমান্বয়ে দূর হচ্ছে। অত্র জেলার সকল কৃষি কর্মীগণ বিশেষ কার্যক্রমকে স্বাভাবিত কর্মের পাশাপাশি আবশ্যক পালনীয় কর্তব্য হিসেবে গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে অধিদপ্তরের আগ্রহ ও পরামর্শে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি স্থানীয় উন্নত জাতের ফসল উৎপাদন, এলাকা ভিত্তিক ফসলের আবাদ, বিলুপ্ত প্রায় ফল ও উপকারি বৃক্ষরোপণ, ভিটামিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ ফলের আবাদ,রাসায়নিক সারের বিকল্পে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফসলের বালাই দমন প্রভূতি কার্যক্রমে অধিক গুরুত্ব সহিত হাতে নেয়া হয়েছে।

এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,চাঁদপুর জেলার সমন্বয়ে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের নিমিত্তে কাজ করে যাচ্ছে ও ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ আরম্ভ করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলার কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত কৃষি বিষয়ক পরিকল্পনা সফল বাস্তবায়ন জেলার খাদ্য ঘাটতি পূরণ,দারিদ্রমোচন ও পুষ্টির অভাব দূরীকরণসহ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

আবদুল গনি,
২৩ সেপ্টেম্বর,রোববার,চাঁদপুর
এজি

Edit