সাপের জিভ বের করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাকৃতিক আচার, যা তাদের জীবনধারার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সাপের জিভ বের করার প্রধান কারণ হলো জ্যাকবসন অঙ্গ। এটা ভোমেরোনাসাল অঙ্গ নামেও পরিচিত। সাপের মুখের উপরের অংশে অবস্থিত এই অঙ্গটি গন্ধ বা রাসায়নিক তথ্য সংগ্রহ এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য কাজ করে।
সাপ যখন তার জিভ বের করে, তখন তার জিভের দ্বিমুখী শাখা চারপাশের বাতাস থেকে রাসায়নিক কণা সংগ্রহ করে। এরপর সেই কণা জিভের সাহায্যে মুখের ভেতরে জ্যাকবসন অঙ্গে পৌঁছায়। সেই কণাগুলো বিশ্লেষণ করে এবং সাপকে আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। সাপ শিকার খুঁজে বের করার জন্য জিভের সাহায্যে গন্ধ এবং রাসায়নিক সংকেত ব্যবহার করে।
তারা গন্ধের খুব ক্ষুদ্র পরিবর্তন শনাক্ত করতে সক্ষম। ফলে খুব সহজেই শিকার কোথায় আছে তা বুঝতে পারে। শিকার চলাচলের দিক নির্দেশনা সঠিকভাবে বোঝার জন্য সাপের জিভের দ্বি-শাখা পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। জিভের দু দিকের শাখাগুলো ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে গন্ধ সংগ্রহ করে।
ফলে সাপ সঠিকভাবে গন্ধের উৎসের অবস্থান নির্ধারণ করতে পারে। সাপ তাদের চারপাশের অবস্থা জানার জন্য গন্ধ শনাক্ত করার অনেকটাই নির্ভরশীল। তারা বিপদ বা শিকার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে প্রায়ই জিভ বের করে। এটা তাদের নেভিগেশন সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। ফলে তারা আশেপাশের পরিবেশের পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং তাদের চলাচলের দিক ঠিক করতে পারে।
সাপ জিভের সাহায্যে অন্যান্য সাপের গন্ধও শনাক্ত করতে পারে। এটা তাদের প্রজনন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করে। মাটিতে বা গাছে থাকা গন্ধ দ্বারা তারা অন্য সাপের উপস্থিতি, বিশেষ করে বিপরীত লিঙ্গের সাপের উপস্থিতি বুঝতে পারে।
সাপের জিভ বারবার বের করা তাদের স্বাভাবিক আচরণের অংশ। এটি তাদের দর্শনশক্তির দুর্বলতার কারণে আরও বেশি করে দরকার হয়। অনেক সাপের দৃষ্টি শক্তি খুব ভালো নয়, ফলে তারা গন্ধের উপর নির্ভরশীল থাকে।
সাপের ঘন ঘন জিভ বের করার প্রক্রিয়া তাদের বেঁচে থাকার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আচরণ। এটি সাপকে শিকার খুঁজে বের করতে, বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে, এবং অন্যান্য সাপের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে। সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এজি