চাঁদপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ আগস্ট। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সাল,১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধার,কবি,সংগীতজ্ঞ,ঔপন্যাসিক,গল্পকার,নাট্যকার, প্রাবন্ধিক,
সাংবাদিক,চলচ্চিত্রকার,গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
নজরুলের সৃষ্টিকর্ম প্রসঙ্গে নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম লিখেছেন,‘নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন, যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা,রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। সেই সময়ে ধর্মান্ধ মুসলমানদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ নেতার মতো। এবারের ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনেও আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের গানও আমাদের প্রেরণা ও উদ্দীপনা যুগিয়েছে ।
মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা,গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। নজরুল ছিলেন চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন,প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত: তিনি বিদ্রোহী,কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদ প্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন,‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। প্রেম,দ্রোহ,সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আবদুল গনি
১৯ আগস্ট ২০২৪
এজি