চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নেতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনতার বিজয় হয়েছে। স্থানীয় সাংসদের আস্থাভাজন জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান হাজী মো. জসিম উদ্দিনকে ১৫শ ১৮ ভোটে প্ররাজিত করে আগামি ৫ বছরের জন্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী।
দ্বিতীয় ধাপে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত ২১ মে মঙ্গলবার। সকাল থেকে মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট, রেপিড একশান ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ছিলেন। এবারের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা শেষে দেখা যায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজীর (আনারস) পেয়েছে ২৬৫৮৮ ভোট। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির আস্থাভাজন হাজী মো. জসিম উদ্দিনের (দোয়াত কলম) প্রতীক পেয়েছেন ২৫০৭০ ভোট, এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান মজুমদার রানা (ঘোড়া মার্কা) পেয়েছেন ১০৩০ ভোট। তার মধ্যে মূলত লড়াই হয় আনারস ও দোয়াতকলম প্রতীকের মধ্যে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার উত্তর অঞ্চলে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজীর বাড়ী আর দক্ষিণ অঞ্চলে পড়েছে দোয়াতকলম প্রতীকের প্রার্থী হাজী মো. জসিম উদ্দিন। মাঝখানে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে থেকে এবার প্রার্থী না থাকায় তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে এক হয়ে স্থানীয় সাংসদের আস্থাভাজন হাজী মো. জসিম উদ্দিনের দোয়াতকলম প্রতীকের পক্ষে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মাঈনুদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খালেদুর রব মিঠু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব উল আলম লিপন, সাধারণ সম্পাদক হায়দার পারভেজ সুজন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহমেদ খসরু, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মাসুদ ইকবাল, যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন সোহেল, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বিসহ সাবেক ছাত্রনেতারা সবাই একজোট হয়ে হাজী জসিম উদ্দিনের দোয়াতকলম মার্কার নির্বাচন করেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েও তেমন কোন নেতা না পেয়ে একাই জনতার সাথে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী। সেই সুবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ লোকমুখে প্রচারিত হয় নেতা নয় জনতার বিজয় হয়েছে।
নব-নির্বাচিত হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজি এ বিজয়কে জনতার বিজয় বলে উৎসর্গ করেন।
উল্লেখ্য, উপজেলায় গত ২১ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল এবং ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল এবং ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল, ৩০ এপ্রিল প্রত্যাহারের শেষ দিন, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে এবং ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে।
এর আগে গত পহেলা এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বইতে শুরু করে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার পূর্বে এবং পরে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই প্রচার-প্রচারণা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন জন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ও দুইজন লড়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। তার মধ্যে রাবেয়া আক্তার রুবির প্রজাপতি প্রতীক ২৮০৮৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম রুবি আক্তারের ফুটবল পেয়েছে ২৪১৯৯ ভোট। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কামরুজ্জামান সুমন।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২১ মে ২০২৪