চাঁদপুরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সরকার মোহাম্মদ সেলিম জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ এ জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন শিক্ষক। তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন ,‘তিনি সংশ্লিষ্ঠ সকলের কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন্- যাঁরা তাঁর জন্যে দোয়া করেছেন এবং বিভিন্নভাবে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করেছেন। এ মহান পেশায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে তিনি যেনো মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়েন অবদান রেখে দেশের সেবা করতে পারেন। এ ধরনের স্বীকৃতিতে একজন শিক্ষকের মনোবল যেমন দৃঢ় হয় এবং শিক্ষকতায় আরো উদ্যোমী হতে অনুপ্রেরণা জোগাবে এটা তাঁর বিশ্বাস। বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে যেন এ কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রাখতে পারেন, সে জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।’
সরকার মোহাম্মদ সেলিম চাঁদপুর সদরের কল্যাণপুর ইউনিয়নের কল্যান্দি গ্রামে ১ জানুয়ারি ১৯৭৭ সালে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম মো:আবুল হোসেন সরকার ছিলেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর সেনানী, ’৭১ সালে তৎকালীন এলাকার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ও সফরমালী বাজারের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী। তাঁর মা শাহানারা বেগম একজন রত্নগর্ভা গৃহিণী। কেননা তাঁর গোটা পরিবারটিই উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষক পরিবার। এতদ অঞ্চলে তারা ভদ্র, বিনয়ী পরিবার হিসেবে পরিচিত । সরকার সেলিম ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে চতুর্থ । তিনি ২০০১ থেকে প্রায় দুযুগ যাবত মহান শিক্ষকতা পেশার সাথে সম্পৃক্ত। স্কুল জীবনে তিনি ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। জীবনের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষাগুলোতেই তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আসছেন।
পূর্বকল্যান্দি সরকারি প্রাথমিক স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী শেষে সদরের সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি ঐ বিদ্যালয় হতে ১৯৯১ সালে এস এসসি, ১৯৯৩ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি ও বি এস এস ১৯৯৭ এবং ২০০০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর, ২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৬ সালে তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে মহান শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। অত:পর তিনি বিভাগীয় নির্দেশে বর্তমান জেলার অন্যতম নারী শিক্ষার আলোকবর্তিকা চাঁদপুর জেলা শহরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে গেছেন। তাঁর বড় ভাই মো. শাহ আলম সরকার লক্ষীপুর জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক তৈরির কারখানা হিসেবে পিটি আই এর সুপারিন্টেন্ট ছিলেন। এর পূর্বে ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এনসিটিবিতে এবং নেপ ময়মনসিংহ সহকারী বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,ঢাকা তে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর মেঝভাই সরকার আবুল কালাম আজাদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট একবোন আয়েশা আকতার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
অপরজন শারমিন আকতার ২০২২ সালের জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত হন।তিনি বর্তমান ও বিগত শিক্ষা কারিকুলামের একজন জেলার দক্ষ মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে জেলা ও জেলার বাইরে পরিচিত। এছাড়াও কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে একাধিকবার পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর সহযোগিতায় উক্ত বিদ্যালয় বিতর্কে জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ অর্জনে সমর্থ হন।২০১৬ সালে দুদক কর্তৃক আয়োজিত বিতর্কে জাতীয় পর্যায়ে রানারআপ হয়এবং তিনি সেরা মেন্টর নির্বাচিত হন।খেলোয়ার, কন্ঠ শিল্পী ও সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে তাঁর সুনাম রয়েছে। এ বছর ২০২৪ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলীর বিবেচনায় উপজেলা ও জেলায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হন।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৯ মে ২০২৪