দেশে অসংখ্য অপরাধী আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকলেও কোওনা অপরাধ না করেই কারাভোগ করতে হয়েছে সিলেটের ফজলু মিয়ার। তাও এক দুই বছর নয়, দীর্ঘ ২২টি বছর কারাগারে কেটেছে তার। অবশেষে আজ বুধবার জামিনে মুক্তি দিয়েছেন সিলেটের আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই সিলেটের আদালতপাড়া থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ফজলুকে আটক করেন তৎকালীন ট্রাফিক সার্জেন্ট জাকির হোসেন। সন্দেহের বশে ৫৪ ধারায় ফজলুকে ধরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তারপর ফজলুর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য আইনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এরপর ফজলু মিয়াকে একাধিকবার জামিন প্রদান করেন আদালত। কিন্তু তার কোনো নিকটাত্মীয়ের খোঁজ না পাওয়ায় মুক্ত হতে পারেননি ফজলু।
এভাবে পেরিয়ে যায় দীর্ঘ ২২ বছর। অবশেষে কয়েকদিন আগে ফজলু মিয়ার এক সহপাঠি, নগরীর দক্ষিণ সুরমার তেতলি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেল জানতে পারেন তার (ফজলু) কারাবাসের বিষয়টি।
কামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, ‘দক্ষিণ সুরমার তেতলি এলাকার বাসিন্দা ফজলু মিয়া আমার সহপাঠি ছিলেন। তাকে অনেক বছর খুঁজেছি। কিন্তু পাইনি। তিন বছর আগে জানতে পারি তিনি মারা গেছেন। এরপর খোঁজাখুঁজি বন্ধ করে দেই। কিন্তু কয়েকদিন আগে জানতে পারি, তিনি কারাবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। এরপর খোঁজখবর নিয়ে তার জামিনের ব্যবস্থা করি।’
সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম জহুরুল হক চৌধুরীর আদালতে ফজলু মিয়ার জামিন শুনানি হয়। ফজলু মিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট জ্যোৎস্না ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন সৈয়দ শামিম আহমদ। ফজলু মিয়ার জামিনের বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট সহযোগিতা করে।
অ্যাডভোকেট জ্যোৎস্না ইসলাম বলেন, ‘আদালতে ফজলু মিয়াকে আসামি নয় বরং একজন ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করেছি। আদালত বিষয়টি অনুধাবন করে জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০৭:৫০ পিএম,১৪ অক্টোবর ২০১৫,বুধবার
এমআরআর