মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের রেশ বাংলাদেশের সীমান্তে পড়ছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিয়ানমারে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে কনফ্লিক্টের (দ্বন্দ্ব) জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্ত।’
রোববার (৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে চায়না একটি ভূমিকা নিতে পারে। রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য একটি বিরাট বোঝা। এমনিতেই বৈশ্বিক কারণে আমরা সংকটে আছি। এদের জন্য যে সাহায্য আসতো সেটিও আগের থেকে অনেক কমে গেছে। তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে চীন ভূমিকা পালন করতে পারে। সেই বিষয়ে আমি বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন মিয়ানমারের যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আমাদের সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত এর রেশ এসে গেছে। আমাদের সীমান্ত থেকে প্রায়শই গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। একটা আতঙ্ক তো ছড়ায়। আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ নয়, যুদ্ধটা তাদের অভ্যন্তরীণ। এ বিষয়ে আমরা তাদের (চীন) হস্তক্ষেপ আশা করেছি।’
চীনের রাষ্ট্রদূত সব কিছুতেই ইতিবাচকভাবে জবাব দিয়েছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এরই মধ্যে মিয়ানমারে ১৪ জন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশ বান্দরবান নেশায় আশ্রয় নিয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি এগুলো নিয়েই বলেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ভূ-রাজনীতিতে ভারত এবং চীনের একটা শক্তি, বলয় রয়েছে। তাদের কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট আছে। ওগুলোর মধ্যে আমরা নাক গলাতে যাই না। আমাদের ওগুলোর দরকার নাই। আমরা আমাদের স্বার্থ নিয়ে বলবো। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে আমরা যেন তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের শিকার না হই। আমাদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।’
‘এখন মিয়ানমারে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে কনফ্লিক্টের জন্য আমরা যে ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু কিছু ক্ষতি তো আমাদের হচ্ছেই। কোনো কোনো সময় আমাদের আকাশ সীমা তারা অতিক্রম করছে, এমন রিপোর্টও আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সেই বিষয়গুলোতে তাদের একটু বেশি করে মনোযোগ দেওয়া উচিত। যেহেতু মিয়ানমারের সঙ্গে চায়নার একটা চমৎকার সম্পর্ক, সেজন্য চীন এখানে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে কি না, করলে আমরা উপকৃত হব। এটাই বলেছি।’
রোববার সচিবালয়ে একজন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়নি বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এর আগে মেথিউ মিলার যা বলেছেন, পিটার হাসের বক্তব্য সেই একই। তবে তারা এটা বলেনি যে, এই নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। এ ধরনের মন্তব্য তারা করেনি। এটা হলো চরম মন্তব্য। যে মন্তব্যটা করলে হয়তো খারাপ কিছুর আশঙ্কা করা যেত।’
‘বিএনপি এবং সমমানারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাই নির্বাচনটা খারাপ হবে, এটা তো মনে করার কোনো কারণ নেই। যাক, সম্পর্ক তো আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে সেটার আরও অগ্রগতি হবে’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বলার পরও তাদের সঙ্গে কাজ করতে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে কি না- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাজ করতে আবার দ্বিধাদ্বন্দ্বের কী আছে, তারা তো বলেছে তারা কাজ করতে আগ্রহী। আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করবো না। কোনো প্রয়োজন তো নেই। সারা পৃথিবী এখন সংকটে। এ সময় গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধানোর কোনো প্রয়োজন নাই। এতে কারো লাভ নেই। সম্পর্কটা থাকুক সামনে আরও উন্নয়ন হবে সম্পর্কের। এটা যার যার স্বার্থেই আমাদের প্রয়োজন। আমেরিকারও ইন্টারেস্ট আছে, আমাদেরও আছে।’
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur