ধরুন, ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আগুনের লেলিহান শিখার মধ্যে পড়ে গেছেন আপনি। সঙ্গে রয়েছেন আপনার মা ও প্রেমিকা। কিন্তু পরিস্থিতিটা এমন যে, এ মুহূর্তে যেকোনো একজনকে বাঁচাতে পারবেন আপনি। ঠিক সে মুহূর্তে কী করবেন আপনি?
ভাবছেন ঠাট্টা? কিন্তু প্রশ্নটা মোটেও ঠাট্টার নয়। একটি পরীক্ষায় এসেছে এই প্রশ্ন। আর পরীক্ষার্থীদের মাথা চুলকে, কলম কামড়ে, দাঁতে দাঁত চেপে ভাবনা-চিন্তা করে খাতায় লিখতে হয়েছে এ প্রশ্নের উত্তর।
চীনের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল এক্সামিনেশনে শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও বিচারকদের এ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আর এ পরীক্ষার ফলাফলের ওপরই নির্ভর করবে, কে চীনে আইনপেশায় কাজ করতে পারবে আর কে পারবে না।
প্রশ্নটি এভাবে করা হয় : যদি একজন ব্যক্তি তার মাকে বাঁচাতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও প্রেমিকাকে বাঁচায়, তাহলে কি সে অপরাধ করল?
পরীক্ষার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ করে চীনের আইন মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, ওই ব্যক্তি যদি তার প্রেমিকাকে বাঁচাতে গিয়ে মাকে না বাঁচায়, তাহলে সেটা এক ধরনের অপরাধ হবে। কারণ, চীনের আইন অনুযায়ী, একজন ছেলে তার মাকে বাঁচাতে বাধ্য, প্রেমিকাকে নয়।
প্রশ্নটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশ্নের উত্তরের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত পাওয়া যায়। নেটিজেনদের বড় একটি অংশ বলছে, মাকে বিপদের মুখে ফেলে যাওয়াটা খুবই খারাপ কাজ।
প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আমি অবশ্যই আমার মায়ের জীবন বাঁচাতাম। তবে আইনের ভয়ে নয়, কারণ তিনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন। তা ছাড়া আমার প্রেমিকা বয়সে তরুণ। সে নিজেই আগুন থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজে নিতে পারবে।’
তবে আইনটিকে অন্যায্য বলেও মনে হয়েছে কারো কারো কাছে। তাঁরা বলছেন, সব মানুষের জীবনের মূল্য সমান। সে জন্য আইনের চোখে সবার সমান মর্যাদা হওয়া উচিত। মাকে বিপদের মুখে ফেলে যাওয়া যদি অপরাধ হয়, তাহলে সেই একই বিপদের মুখে প্রেমিকাকে ফেলে যাওয়াটা কেন অন্যায় হবে না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।
|| আপডেট: ০৭:২০ অপরাহ্ন, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বুধবার,চাঁদপুর টাইমস-ডিএইচ/২০১৫।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur