কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলায় গ্রামের লোকজনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে একটি গ্রামের ৫০ টি পরিবার।
ঘটনাটি জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের কালাকচুয়া গ্রামে।
অভিযোগ সূত্রে এবং এলাকাবাসী জানায়, কালাকচুয়া গ্রামের মৃত সফিকুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন (৪২) ও একই গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০) গ্রামের শতাব্দী প্রাচীন একটি চলাচলের পথের উপর প্রাচীর নির্মাণের করেন। এতেকরে জনগণের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
অথচ এই রাস্তা নিয়ে নিম্ন আদালতে একটি মামলাও চলছিলো। আদালতের আদেশ তোয়াক্কা না করেই শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে কবির হোসেন ও জসিম উদ্দিন অজ্ঞাতনামা কয়েকজন লোক এনে রাস্তার মধ্যে প্রাচীর তুলে দেন।
এসময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জরুরী সেবা সেন্টার ৯৯৯ এ কল দিলে, পুলিশ এসে কাজে বাধা দেন। পরে তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই এই দেয়াল নির্মাণ করেন।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় ‘গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা জোরপূর্বক দখল করে প্রাচীর দিয়ে দিয়েছে। আমরা কয়েকজন গ্রামবাসী এলাকার ইউপি সদস্য কামাল হোসেনকে বিষয়টি জানালেও তিনি এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় নিয়ে বরং উল্টো নিজে থেকে প্রাচীর নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
অথচ, প্রায় ৫০ টি পরিবারের ৫০০ মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি।
ভুক্তভোগী আমেনা বেগম বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষদের আমল থেকে এ রাস্তা আমরা ব্যবহার করে আসছি। হঠাৎ করেই রাস্তা বন্ধ করে দিলে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, ছেলে মেয়েরা স্কুলে কলেজে যেতে পারছে না। প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুল আবেদন আমাদের রাস্তা আমাদের ফিরে দেন।
আরেক ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, তিনদিন ধরে মসজিদে যেতে পারছি না, বাড়ি বসে আমরা পুরুষরা নামাজ আদায় করছি, পুরো রাস্তা কবির ও জসিম দেয়াল তুলে বন্ধ করে দিছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
প্রাচীর নির্মাণের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত কবির হোসেন বলেন, আমি যে জায়গায় প্রাচীর তুলেছি, সেটা আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। এছাড়াও, তারা যদি তাদের রাস্তার জায়গা না রেখে বাড়িঘর নির্মাণ করেন সেখানে আমি কি করবো। আর, আমি তাদেরকে কোনো হুমকি ধামকি কিংবা লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করি নি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
ইউপি সদস্য কামাল হলেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন। এরা তাদের মধ্যাকার ঝামেলা, আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। ইউপি চেয়ারম্যানসহ আমরা এলাকাবাসী বসে এই বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করবো।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আকতার বলেন, আমি এই বিষয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি। সে এই বিষয়ে দুইপক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করবেন।
এই বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, আমি গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি, উপজেলা দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি, যাতে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur