চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
কলেজ ছাত্রের টুকরো করা লাশ গুম করার সময় জনতা এক তরুণীকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছে।
পুলিশের দাবি, তরুণীর সঙ্গে কলেজছাত্রের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হাওয়ায় ওই তরুণী ‘ভাড়া করা লোকদের’ দিয়ে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে সাত টুকরো লাশ গুমের চেষ্টা করেন। মাথা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন বস্তাবন্দী লাশটি নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী খোরশেদ আলমের (২৬)। আর লাশটি নদীতে ফেলার সময় আটক হওয়া নারী তার সাবেক সহকর্মী আনিছা সুলতানা ওরফে এনি (২৪)। শারীরিক নির্যাতন থেকে বাঁচতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে আনিছা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রেদন মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত খোরশেদ আলম রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর এলাকার ওয়েদ আলীর ছেলে। সে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষার্থী ছিল। অপরদিকে আনিছা সুলতানা সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে। সে একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করত। এর আগে তার একটি বিয়ে হয়েছিল। স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় সে ডিবোর্স করে চলে আসে।
সদর মডেল থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোরশেদ আলম নরসিংদী সরকারি কলেজে সম্মান শ্রেণীতে পড়াশুনার পাশাপাশি গাবতলী এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে পড়াত। সেখানেই আনিছার সঙ্গে পরিচয় ও পরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত আনিছার বরাত দিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম আবুল কাসেম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া আনিছা জানায় খোরশেদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়েতে আনিছার সম্মতিও ছিল। মঙ্গলবার রাতে খোরশেদ আনিছার ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে তার অমতে শারীরিক সম্পর্কের জন্যে জোরাজোরি করলে নিজেকে বাঁচাতে ঘরে থাকা বটি দিয়ে প্রথমে খোরশেদকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে রাগের বশে চাপাতি দিয়ে মাথা, হাত ও পা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। পরে ওই দিন রাতেই কেটে ফেলা হাত, পা ও মাথা পার্শ্ববর্তী বাদুয়ারচর এলাকায় হারিদোয়া নদীতে ফেলে আসে। আর শরীরের বাকি অংশ বুধবার রাতে বস্তাবন্দী করে সোনাতলা এলাকায় হারিদোয়া নদীতে ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পরে।
ওসি আরো বলেন, আনিছার দেওয়া জবানবন্দী অনুযায়ী নিহতের হাত, পা ও মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি ও চাপাতি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রেদন মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে আদালতের মাধ্যমে বিশদভাবে তদন্ত করা হবে। কারণ গ্রেফতার হওয়া নারীর জবানবন্দীতে অনেক গড়মিল রয়েছে।
স্থানীয় পুটিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘বস্তাসহ পোলাপাইন (তরুণ) আর মহিলারে দেইখা সন্দেহ হয়। কাছে যাইতেই পোলাপাইনগুলা দৌড়াইয়া পালাইয়া যায়। আর মহিলা দৌড় দিতে না পারায় আমরা তারে ধইরা ফেলি। পরে বস্তা খুলতেই দেখি লাশ। শুনছি, মহিলার বাড়ি শহরের গাবতলী এলাকায়।’
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫