ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রেম করে বিয়ের ৯ মাস পরই বিচ্ছেদ হয়েছে এক দম্পতির। এই বিচ্ছেদের পর খুশিতে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন স্বামী মিজানুর মোল্লা (২৪)।
বুধবার (২১ জুন) বিকেলে উপজেলার রুদ্রবানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য বাবর আলীর বাড়িতে উভয়পক্ষ মীমাংসায় বসে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর একই গ্রামের ইলিয়াস মোল্লার ছেলে মিজানুর মোল্লা ও প্রতিবেশী মোশারফ মোল্লার মেয়ে প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের দুই মাস পরে মেয়েপক্ষ তাদের বিয়ে মেনে নেয়। প্রথমদিকে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই চলছিল। কিন্তু মাস দুই পরেই তাদের সংসারে কলহ দেখা দেয়।
ছেলে অশিক্ষিত আর মেয়ে স্নাতকে পড়াশোনা করেন। শিক্ষিত বউ দরিদ্র শ্বশুরের পরিবারের কাউকে তেমন পাত্তা দেন না। শ্বশুর-শাশুড়িকে রান্নাবান্না করেও খাওয়ান না। এ নিয়ে পরিবারে কলহ শুরু হয়। এরপর স্ত্রী স্বামীকে শর্ত দেন যে সংসার টেকাতে হলে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকা যাবে না। তারা আলাদা সংসার করবেন।
স্ত্রীর শর্তের বিষয়টি মিজানুর মোল্লা তার বাবা-মাকে জানালে ছেলের সুখের কথা চিন্তা করে তাদের আলাদা করে দেন। তারপরও সবসময় তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। একপর্যায়ে মেয়ের বাবা-মা মেয়েকে দিয়ে আদালতে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করান। বুধবার দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বাবর আলীর বাড়িতে দুইপক্ষের উপস্থিতিতে বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি হয়।
এ বিষয়ে মিজানুর মোল্লা বলেন, প্রেম করে শিক্ষিত মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকেই আমি ও আমার পরিবারের সবাই অনেক জ্বালা-যন্ত্রণার শিকার হই। আমার বাবা-মা স্ত্রীর ব্যবহারে অনেক কষ্ট পেয়েছে। মীমাংসার পরে আমি ও আমার বাবা-মা মুক্ত হয়েছি। আমার পরিবার অশান্তি ও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আনন্দে ২০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলমগীর কবির জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষেরদিকে তারা প্রেম করে বিয়ে করে। এর কয়েক মাস পর থেকেই সংসারে অশান্তি দেখা দেয়। বিয়ের ৯ মাস পর বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। পরে মিজান মোল্লা ২০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল করে সেটি উদযাপন করেন।
এ বিষয়ে বানা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাবর আলী বলেন, প্রেমের সম্পর্কের পর ৯ মাস আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর দুই পরিবার তাদের মেনে নেয়। কিন্তু এরপরই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। বুধবার দুপুরে উভয়পক্ষের সম্মতি ও পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের খোলা তালাক হয়। বৃহস্পতিবার তাদের তালাকের কাগজ আদালতে জমা দেওয়া হবে।
বানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ হারুন অর রশীদ বলেন, ব্যস্ততার কারণে ঘটনার বিস্তারিত জানা নেই। তবে লোকমুখে শুনেছি।
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, লোকমুখে শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানতে পারিনি।
টাইমস ডেস্ক/ ২২ জুন ২০২৩