বিয়ে করাই যেন তার নেশা ও পেশা। একটি দুটি নয়, একই নারীসহ চার-চারটি বিয়ে করেও যেন ক্ষ্যান্ত হননি তিনি। এবার ৪ দিনের নববধূকে গৃহে রেখে পুরানো তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মাইমুনা আক্তারকে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত যুবক সালাউদ্দিন মোল্লা কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মোল্লার ছেলে। ৩ জুন শনিবার উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের মোল্লা বাড়িতে পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের অধিবাসী মো. গিয়াস উদ্দিন মোল্লার ছেলে সালাউদ্দিন মোল্লার সাথে একই গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে মাইমুনা আক্তার পাখির ২০২১ সালের ১ অক্টোবর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের গৃহে মীম আক্তার নামে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়।
সালাউদ্দিন মোল্লা ও মাইমুনা আক্তার পাখির দাম্পত্য জীবন সুখে শান্তিতে কাটলেও সম্প্রতি তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়া দিলে উভয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের বিজ্ঞ আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৩ মার্চ উভয় পরিবার ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক শেষে মামলা নিষ্পত্তি করে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এবছরের ৩০ এপ্রিল সালাউদ্দিন মোল্লার পরিবার তাকে পাশ্ববর্তী মতলব দক্ষিণ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আবুল কালামের যুবতী কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে দ্বিতীয় বিয়ে হিসেবে আবদ্ধ করে। কিন্তু এরই ফাঁকে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মাইমুনা আক্তার পাখি তার সাবেক স্বামী সালাউদ্দিন মোল্লা দ্বিতীয় বিয়ে করার সংবাদ শুনে তাকে বিভিন্ন ভাবে ফুঁসলিয়ে বাচ্চার অজুহাত দিয়ে তাদের বাড়ি নিয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে গত ৩জুন শনিবার উভয়ে উধাও হয়ে যায়।
স্থানীয় অধিবাসী আলাউদ্দিন মোল্লা, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম গাজী,এমরান প্রধানসহ আরো অনেকে বলেন, কয়েক বছর আগে গিয়াস উদ্দিন মোল্লার স্ত্রী মারা যান। পরবর্তীতে সংসারের হাল ধরতে তার ছেলে সালাউদ্দিন মোল্লাকে বিয়ে করান। কিন্তু বিয়ের পর তাদের সুখ-শান্তি না হওয়ায় উভয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা-মোকদ্দমা করেন। এক পর্যায়ে সংসার বিচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে গৃহে নতুন বউ রেখে আবারো তাদের একত্রে হওয়ার বিষয়টি সামাজিক পরিপন্থী।
সালাউদ্দিন মোল্লার বাবা গিয়াস উদ্দিন মোল্লা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার ছেলেকে প্রথমত একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়েকে বিয়ে করাই। ওই সময় পুত্রবধু অবাধ্য থাকায় তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় কাজী অফিসের মাধ্যমে তালাক দেয়া হয়। আমার ছোট নাতনীর মাসিক খরচ বাবদ মাসে ১ হাজার টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। এরই ফাকে আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে সু-চতুর মাইমুনা আক্তার পাখি ছেলেকে নিয়ে জোর পূর্বকভাবে উধাও হয়ে যায় বলে শুনেছি। বর্তমানে মাইমুনা আক্তার পাখি মুঠোফোনের মাধ্যমে আমাকে মোটা অংক দাবি করে নানান ভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এক দিকে ঘরে নতুন পুত্রবধু, অন্যদিকে ছোট নাতনীর ভবিষ্যত নিয়ে আমি দু:শ্চিন্তায় রয়েছি।
বিষয়টি সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই। এদিকে মাইমুনা আক্তারের বাবা নজরুল ইসলামের বক্তব্য জানতে মোবাইলে বারবার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কচুয়া প্রতিনিধি, ৯ জুন ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur