Home / বিশেষ সংবাদ / বিপুল জলরাশি,মৎস্য ও প্রাণিকূলের বিশাল সম্ভারে সমৃদ্ধ মতলবের ধনাগোদা নদী
Dhonagoda-River-
আবহাওয়মান কাল যাবৎ বহমান মতলব ধনাগোদা নদী র দৃশ্য

বিপুল জলরাশি,মৎস্য ও প্রাণিকূলের বিশাল সম্ভারে সমৃদ্ধ মতলবের ধনাগোদা নদী

ধনাগোদা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চাঁদপুর জেলার সদর ও মতলব উপজেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৪১ কি.মি, গড় প্রস্থ ২২৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক ধনাগোদা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী। মেঘনা নদী থেকে এর উৎপত্তি। এর দু ‘পাড়ে রযেছে বিস্তৃত জলাভূমি ্। যেখানে রয়েছে দেশিয় মাছের মাছের অভয়ারণ্য। নদীটি মতলব কে দু ভাগে ভাগ করলেও খাদ্য শস্য ও মৎস্য উৎপাদন এবং নৌ-যাতাযতে কৃষিপণ্য পরিবহণে অসামান্য অবদান রেখে চলছে।

ধনাগোদা নামের নদীটি চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব উপজেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়নে প্রবহমান মেঘনা আপার নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতপর নদীটি একই উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়ন অবধি প্রবাহিত হয়ে পুনরায় মেঘনা আপার নদীতে পতিত হয়েছে। বিপুল জলরাশি, মৎস্য ও প্রাণিকূলের বিশাল সম্ভারে সমৃদ্ধ এ নদী। সড়ক পথে বা নৌ-পথে এখানে আসা যায়। মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ এর মাঝে বিভক্তকারী এ নদী। মতলব ফেরি ঘাট একটি দর্শনীয় স্থান। ধনাগোদা নদীর উত্তর তীরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা আছে। এ বেড়ী বাঁধ বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হয় ।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা ও আশেপাশের অঞ্চলের বিভিন্ন খাল ধনাগোদা নদীর সাথে সংযুক্ত। প্রথমে আসে জমজম কানেলের কথা। জমজম খালটি দগরপুর, নওগাঁ হয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলার সীমানা ডিঙ্গা ভাঙ্গা পার হয়ে হাজীগঞ্জ থানার মেনাপুর হয়ে রাজারগাও বাজারে গিয়ে শেষ হয়। ধনাগোদা নদীতে সংযুক্ত সাচার খালটি মতলব দক্ষিণের নায়েরগাঁও হয়ে কচুয়া উপজেলার উত্তর-পশ্চিম অংশ দিয়ে প্রবেশ করে বড়দৈল, সাচার, বিতারা, জলা তেতৈয়া, কোমরকাশা হয়ে কচুয়া পৌরবাজারের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের কড়ইয়া, ডুমুরিয়া ও কালোচোঁ গ্রাম হয়ে হাজীগঞ্জের নিকট ডাকাতিয়া নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। হাজীগঞ্জের বোয়ালজুড়ি খালটি ধনাগোদা নদীর মাছুয়াখাল প্রান্ত থেকে নারায়ণপুর বাজার হয়ে মেহারুন, চারটভাংগা, বাংলাবাজার, চৌমুহনী বাজার, ডড্ডা হয়ে হাজীগঞ্জের নিকট ডাকাতিয়া নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।

মেঘনা নদীর পাশাপাশি এক সময় ধনাগোদা নদীই ছিল মতল উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। ধনাগোদা নদীর লঞ্চ যোগাযোগ ব্যবস্থা মতলব দক্ষিণ উপজেলাকে ঢাকা ও নারায়ণঞ্জ শহরের সাথে যুক্ত করে। বর্তমানেও সীমিত আকারে এ নদীর মাধ্যমে একস্থান থেকে অন্যস্থানে মালামাল ও লঞ্চ যোগে যাত্রী পারাপার করা হয়। মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ তথা চাঁদপুরের সাথে ঢাকার সড়ক পথে যোগাযোগ সহজ করার জন্য ধনাগোদা নদীর উপর দুইটি সেতু নির্মান করা হয়। একটি শ্রীরায়েরচর সেতু অপরটি মতলব সেতু। শ্রীরায়েরচর সেতুটি মতলব উত্তর উপজেলার বাংলাবাজার এবং কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার শ্রীরায়েরচরকে যুক্ত করে। মতলব বাজার সংলগ্ন পূর্ব দিকে মতলব সেতুর দৈর্ঘ্য ৩০৪ দশমিক ৫১ মিটার।

মতলব সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ধনাগোদা নদী থেকে স্থানীয়ভাবে ১৯৫০ সালের মৎস্য সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে বিভিন্ন স্থানে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হয়। ধনাগোদা নদী নাব্যতা হারিয়ে দিন দিন সরু হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে দখল-দূষণে সংকটের মুখে একদিকে যেমন পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ। ধনাগোদা নদী থেকে গেলো এক দশকে হারিয়ে গেছে ২০ প্রজাতির মাছ। ধনাগোদা নদীর তীরে বালু মহল গড়ে উঠায় পরিবেশ দূষিত হয়ে স্ব্যাস্থ ঝুঁকিতে পরেছে এলাকাবাসী। তথ্য সুত্র : বাংলা উইকিপিডিয়া।

সম্পাদনায়: আবদুল গনি
২৯ এপ্রির ২০২৩
এজি