মো. রাকিবুর রহমান :
ঢাকা মহানগর ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের প্রতিটি অলি-গলিতেই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের লেডিস এবং জেন্টস বিউটি পার্লার। কিন্তু কি চলছে এসব বিউটি পার্লারের আড়ালে? জেন্টস পার্লারগুলো যেমন তেমন হলেও লেডিস পার্লারগুলোতে অবাধে বেড়ে চলেছে যৌন বাণিজ্য। তাহলে বিউটি পার্লার মানেই কি নোংরামি? বাংলাদেশে অাদৌ কি অনুমোদন রয়েছে এসব বিউটি পার্লারের? নিশ্চয় না। তাহলে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে অনুমোদন না থাকা সত্বেও কিভাবে চলে এসব বিউটি পার্লার? জ্বী হ্যাঁ, এসব বিউটি পার্লার চলে থানা পুলিশের অধীনে। যার মাধ্যমে থানা পুলিশ প্রতিমাসে এসব পার্লার থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
শুধু তাই নয়,এসব পার্লারের লাইসেন্স যেন তাদেরই হাতে। ফলে পার্লার কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছে থানা পুলিশও। আর মাঝখানে পড়ে নষ্ট হচ্ছে আমাদের পরিবেশ এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম।
বর্তমানে নগরীর প্রতিটি অলিগলিতে এভাবেই বাইরে বিউটি পার্লারের নামে রঙ-বেরঙয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে ভিতরে অবাধে চলছে অবৈধ কার্যকলাপ তথা দেহব্যবসা। আর এই অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে নগরীর স্বনামধন্য বিউটি পার্লারগুলোও। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মীনা বিউটি পার্লার, লুনা বিউটি পার্লার, ম্যাপ পারসোনাসহ নগরীর বেশকিছু বিউটি পার্লার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিউটি পার্লারের এক মহিলাকর্মী জানান, আমরা বিভিন্ন দূর-দূরান্ত হতে পেটের দায়ে শহরের দিকে ছুটে আসি একটি ভালো কাজের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এখানে এসে আমাদের পড়তে হয় যৌনতার ফাঁদে। যৌনতা আমাদের পেশা নয়, শ্রম বিক্রি করে হালাল উপায়ে টাকা রোজগার করে সংসার চালানোই আমাদের পেশা। এখানে আমাদের ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয় ঠিকই কিন্তু তা আর কপালে জুটে না। আর আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে গেলেই পরিণামে দেয়া হয় চাকরিচ্যুতসহ প্রাণনাশের হুমকি। ফলে দরিদ্র পরিবারের দিকে তাকিয়ে অবশেষে তাদের হাতে বিক্রি করে দিতে হয় নিজের মূল্যবান দেহটুকু।
এসব বিউটি পার্লার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমরা যৌনকর্মী হয়ে বাঁচতে চাই না, আমরাও অন্য সাধারণ মানুষের মত শ্রম দিয়ে হালাল পথে টাকা রোজগার করে বাঁচতে চাই। আমরা চাই না অন্য কোনো দরিদ্র পরিবারের সন্তান এই ফাঁদে পড়ুক, তাই আমরা চাই এসব পার্লার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক যেন অন্য কোনো দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের এভাবে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে যৌনতার ফাঁদে ফেলা না হয়।
কিন্তু এখনও কেন চলছে এসব বিউটি পার্লার বা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে অাদৌ এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা পাওয়া যায়নি তার কোনো হদিস। কলমের কালি চলছে ঠিকই কিন্তু বিষয়টি রয়ে যাচ্ছে আড়ালে। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছে এসব ব্যবসায়ীরা এবং অবাধেই বেড়ে চলেছে অপরাধ।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur