কুমিল্লার লাকসামে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের সময় পাশ থেকে একটি চিরকুটও পাওয়া গেছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) সকালে ওই ছাত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লাকসাম পৌরসভার হাউজিং এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ফারজানা আক্তার বৈশাখী (১৫) নামের ওই শিক্ষার্থী জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা এলাকার গান্দাছি গ্রামের মৃত ফরিদ মজুমদারের মেয়ে। সে কুমিল্লা হাই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ওই শিক্ষার্থীর মা জেসমিন বেগম এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে বুধবার সকালে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মরদেহের সঙ্গে পাওয়া ওই চিরকুটে শাহাদাত হোসেন রাফি নামে এক তরুণকে নিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে ওই ছাত্রী। রাফি নাঙ্গলকোট উপজেলার বেরি গ্রামের মিয়াজি বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। মঙ্গলবার রাতে আটকের পর বুধবার তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে এদিন দুপুরে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া চিরকুটে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে উদ্দেশ করে বলেছে- ‘মা আমি মরে যাচ্ছি, পারলে আমাকে মাপ করে দিও। বিশ্বাস কর মা আমি মরতে চাইনি। কিন্তু রাফির রোজকার ব্যবহার আমাকে মরতে বাধ্য করেছে। আমার সঙ্গে সম্পর্কে থাকা অবস্থায় অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। সব জানার পরও আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু ওর প্রতি আমার ভালোবাসা, আর আমার প্রতি ওর আর ওর বন্ধুদের দুর্ব্যবহার আমাকে বাঁচতে দেয়নি মা। আমার মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী রাফি।’
বুধবার রাতে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লাকসাম থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাফিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে তাকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিন সকালে ওই ছাত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ওই ছাত্রীর মা জেসমিন বেগম জানান, লাকসাম হাউজিংয়ে ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গেই থাকতো ফারজানা। সে পরিবারের বড় মেয়ে। পড়াশোনা করতো লাকসাম স্কুল এন্ড কলেজে। অষ্টম শেণিতে পড়া অবস্থায় রাফি নামের ওই ছেলেটি তাকে রাস্তায় উত্যক্ত করতো। পরে জানতে পারি ছেলেটি নেশাগ্রস্ত। তখন তার কাছ থেকে রেহাই পেতে চলতি বছর মেয়েকে কুমিল্লা নগরীর কুমিল্লা হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছি। ওই ছেলের কারণে আমার নাবালক মেয়েটি প্রাণ দিয়েছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
কুমিল্লা প্রতিনিধি,৬ এপ্রিল ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur