দুবাই প্রবাসী মাদারীপুরের আরিফ ও তার চাচাতো ভাই তৈয়ব এবং বগুড়ার শাওন আহমেদ একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। শাওন ছুটি কাটাতে দেশে ফেরার সময় আরিফ ও তৈয়ব বোনদের বিয়ে উপলক্ষে ২৮ ভরি স্বর্ণ এবং বেশ কয়েকটি আইফোন দেয় তার হাতে। বিমানবন্দরে স্বর্ণের ট্যাক্স দেওয়ার জন্য তার কাছে দেওয়া হয় পর্যাপ্ত টাকা, কেটে দেওয়া হয় বিমান টিকিটও। শাওন ফ্লাইটে দেশে ফিরলেও বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ আরিফ ও তৈয়বের স্বজনরা তার দেখা পাননি। শাওন তার কাছে রাখা স্বর্ণ এবং মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয়। চলে যায় শ্বশুরবাড়ি বগুড়ায়।
ওই স্বর্ণালংকার বিক্রি করে সেখানেই একতলা বাড়ি নির্মাণ করে। আরিফ ও তৈয়বের স্বজনরা স্বর্ণ না পাওয়ার বিষয়টি শাওনের পরিবারকে জানালেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। পরবর্তীতে বিমানবন্দর থানায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্ত শাওনকে বগুড়া থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় ২৮ ভরি স্বর্ণ ও বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোনের মধ্যে মাত্র ৮ ভরি স্বর্ণ এবং দুটি ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। তাছাড়া গয়না ও মোবাইল বিক্রির সাড়ে চার লাখ টাকাও জব্দ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, দুবাই প্রবাসী মাদারীপুরের আরিফ ও তার চাচাতো ভাই তৈয়ব তাদের বোনদের বিয়ে উপলক্ষে ২৮ ভরি স্বর্ণ এবং হবু বোনজামাইদের জন্য আইফোন এবং বেশ কয়েকটি মোবাইল পাঠায়। দুবাই প্রবাসী শাওন আহমেদ গত ১২ জানুয়ারি ছুটি কাটাতে দেশে ফেরার সময় সেসব মূল্যবান জিনিসপত্র তার কাছে দেওয়া হয়। স্বর্ণের ট্যাক্স পরিশোধ বাবদ সাড়ে চৌদ্দশ দিরহামও দেওয়া হয়। ট্যাক্স পরিশোধের পর বিমানবন্দরে আরিফ ও তৈয়বের স্বজনদের কাছে স্বর্ণ ও মোবাইল না দিয়ে শ্বশুরবাড়ি বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চলে যায় শাওন। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সেখানে বাড়ির কাজে হাত দেয় সে। একতলা বাড়িও তৈরি করে। বিক্রি করে দেন বেশিরভাগ স্বর্ণ।
ভুক্তভোগী আরিফের স্বজনরা জানান, আরিফ ও তৈয়বের কথামতো আমরা নির্দিষ্ট দিন এবং সময়ে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর সামনে অপেক্ষায় থাকি। আমাদের সাথে দেখা না করে শাওন কখন কোন দিক দিয়ে চলে যায়, আমরা তাকে আর খুঁজে পাইনি। পরবর্তীতে শাওনের পরিবারের সাথে আমরা যোগাযোগ করি। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা এসব বিষয়টি নিয়ে তেমন সহযোগিতা করেনি। এক মাসের বেশি সময় ধরে তারা সময়ক্ষেপণ করে। পরে আমরা বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করি। বিয়ের জন্য পাঠানো স্বর্ণ না পাওয়ার কারণে আরিফ ও তৈয়বের বোনদের বিয়ে ভেঙে যায়। এতে তারা এখন মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত।
অভিযুক্ত শাওন আহমেদ জানান, স্বর্ণগুলো তিনি বগুড়ায় বেশ কয়েকটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করেছেন। মোবাইলও বিক্রি করেছেন। ধরা পড়ার পরে তিনি এখন এ ঘটনার জন্য লজ্জিত বলে জানান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেশিরভাগ স্বর্ণই বিক্রি করে গ্রেফতার শাওন তার শ্বশুরবাড়ি বগুড়ায় চলে যায়। সেখানে একতলা বাড়ি তৈরি করে। একটি মোটরসাইকেলও কিনে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ধরনের প্রতারণার সুযোগ খোঁজে অনেকেই। বাকি স্বর্ণালংকার উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বার্তা কক্ষ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur