চাঁদপুরে শেষ হলো প্রায় দুই শতাধিক লেখকের অংশগ্রহণে দুই দিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলা। শনিবার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে ও জেলা প্রশাসন চাঁদপুরের বাস্তবায়নে এ সাহিত্যমেলা শুরু হয়।
১২ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিশু সাহিত্যিক, ছড়াকার ও সাবেক সচিব ফারুক হোসেন।
তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সবই ভালো কাজের কথা বলছে। এতে বোঝা যায় খুবই মহৎ কার্যক্রম চলছে। এ আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন। প্রধানমন্ত্রী বইমেলার উদ্বোধনকালে বলেছিলেন, শিশু সাহিত্যের ওপর জোর দিতে হবে। ভবিষ্যতকে তৈরি করতে হলে শিশুদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু এখনো আমরা তেমন শিশু সাহিত্যের ওপর জোর দিচ্ছি না। এ জায়গায় আমাদের শূন্যতা রয়েছে।
সাবেক সচিব বলেন, ব্যতিক্রমী লেখার একটি স্থান হচ্ছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর একটি মাত্র দেশ, যে দেশের জন্যে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করতে হয়েছে। পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যে দেশ ভাষার জন্যেও দিবস পালন করছে। আমরা আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে দেইনি। ফলে আমরা বাংলা ভাষায় লিখছি, বলছি, যার মর্যাদা অনেক। ভাষা আন্দোলনের আগেও অনেক লেখালেখি হয়েছিল। এ ভাষা আন্দোলনের ব্যাপ্তি স্বাধীনতা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চলছে। এমন কোনো কবি বা লেখক নেই যে, তিনি ভাষার জন্যে লেখেননি। যিনি লেখেননি তিনি দুর্ভাগা।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্যে যা কিছু করেছিলেন তা সাহিত্যের জন্যে খুব বড় একটি উপাদান। স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা ভাবলে বঙ্গবন্ধুর ছবি মনে পড়ে যাবে। সুতরাং আমরা যারা লেখালেখি করি তাদের কাছে সবচেয়ে বড় উপাদান রয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু এবং যারা এদেশের জন্যে জীবন দিয়ে গেছেন।
সাবেক সচিব আরও বলেন, বইয়ের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ছাড়া বিকাশ ছড়াবে না। ভালো খসড়ার জন্যে, মন ও মননকে উজ্জ্বীবিত করার জন্যে বই পড়তে হবে। বই শুধু সাময়িক আবেগের জন্যে নয়। কিশোরের মানসিক বিকাশ ঘটাতে বই পড়তে হবে। শিশুদের হাতে বই না দিয়ে শিশুদের মানসিক বিকাশের পথে বাধা দিচ্ছি। অনেকেই আছেন শিশুদের হাতে বই তুলে দিচ্ছেন না, কৃপণতা দেখান। কিন্তু বইয়ের মাধ্যমে আপনার শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটে যা আপনারই কাজে লাগবে।
পরিশেষে তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরের মাটি খুব উর্বর। সৃষ্টিশীলতার জন্যে চাঁদপুর খুব উর্বর জায়গা। সাহিত্যের জন্যে খুবই সম্ভাবনাময় এই চাঁদপুর।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান।
শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশ বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন।
বিশিষ্ট ছড়াকার ডা. পীযুষ কান্তি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন। এছাড়াও অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।
পরে অংশগ্রহণকারী লেখকদের মধ্যে সনদ তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। এছাড়াও একইস্থানে জেলার বিভিন্ন সংগঠনের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur