Home / চাঁদপুর / বিএনপি-জামায়াতকে রুখে দেওয়ার শপথ পড়ালেন কলেজের অধ্যক্ষ
বিএনপি

বিএনপি-জামায়াতকে রুখে দেওয়ার শপথ পড়ালেন কলেজের অধ্যক্ষ

বিএনপি-জামায়াত মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী উল্লেখ করে তাদের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি রুখে দেওয়ার জন্য জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী ও শহীদ রাজু স্মৃতি সংসদের নেতৃবৃন্দকে শপথবাক্য পড়িয়েছেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস। ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সর্ব দলীয় ছাত্র ঐক্যের মিছিলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেওয়া শহীদ রাজুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) তার সমাধিতে এই শপথবাক্য পড়ানো হয়।

শপথবাক্যে বলা হয়, ‘৯০ এর স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান রাজু যেভাবে বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে প্রয়োজনে মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রুখতে হবে।’

এদিকে, কলেজ অধ্যক্ষের এই শপথবাক্য পাঠ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা করছেন বিএনপি ঘরানার লোকজন। জেলা ছাত্রদল নেতা জিয়া সোহাগ লিখেছেন, ‘চাঁদপুর জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ নাকি কোনও দলের অধ্যক্ষ? আপনি বিএনপিকে রুখতে আসবেন না। তার পরিমাণ ভালো হবে না। বিএনপিকে জড়িয়ে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ায় চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমাদের কলেজছাত্র জিয়াউর রহমান রাজু শহীদ হন।এ উপলক্ষে শহীদ রাজু স্মৃতি সংসদের নেতৃবৃন্দের শপথবাক্য তাদের অনুরোধে পাঠ করিয়েছি। এটি আমার নিজের নয়। তবে ওই শপথবাক্যের সঙ্গে আমি একমত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে বিএনপি শব্দটা থাকার কথা না। কারণ, বিএনপিও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছে। তারপরও যদি ওই শপথবাক্যে বিএনপি নাম এসে থাকে তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২৭ নভেম্বর ঢাকায় বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. সামছুল আলম মিলন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ২৮ নভেম্বর সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ সরকারি কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। সেই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান পাটোয়ারী রাজু। মিছিলটি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে চিত্রলেখা সিনেমা হল মোড়ে আসা মাত্র পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। সে সময় সম্মুখভাগে থাকা রাজু গুলিবিদ্ধ হন। ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চাঁদপুর সরকারি সদর হাসপাতালে ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে শাহাদাত বরণ করেন।

এরপর থেকেই প্রতি বছর ৩ ডিসেম্বর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তা শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়ে আসছে। এ বছর ৩২তম শাহাদাতবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন, রাজু স্মৃতি সংসদ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ, তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা ও কলেজ ছাত্রলীগ। (বাংলা ট্রিবিউন)