পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ কম পাওয়া গেলেও সাগরের আমদানি করা ইলিশ চাঁদপুর মৎস্য আড়ৎ এখন সরগরম। যে কারণে পাইকারি আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বড় ট্রলার ও ট্রাকে করে সকাল থেকেই সাগরে আহরিত ইলিশ আসছে শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে। তবে ইলিশের দাম আগের মতোই।
১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ল। সাগরের ইলিশগুলো অধিকাংশ ট্রলার করে ঘাটে আসছে এবং নোয়খালী জেলার হাতিয়া অঞ্চলের ইলিশগুলো আসছে সড়ক পথে ট্রাকে করে।
মাছঘাটের প্রায় ৫০টিরও অধিক আড়ৎ। প্রত্যেক আড়তের সামনে বড় বড় ইলিশের স্তুপ। গত ৩-৪ বছর এত বড় ইলিশ আমদানি হয়নি জানালেন ব্যবসায়ীরা। এবছর সর্বোচ্চ বড় ইলিশ বেশি আমদানি হচ্ছে। বিশেষ করে ১ কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের। ছোট ইলিশ খুবই কম।
মেসার্স ভাই ভাই ফিসারিজের বিক্রেতা শাহাদাত হোসেন বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের চাহিদাই সবচাইতে বেশি। কিন্তু যে পরিমাণ আমদানি হয়, তা চাহিদার তুলনা খুবই কম। জেলেরা যা পাচ্ছে, তার দামও খুব চড়া। ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি লোকাল ইলিশ প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকা। সাগরের ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ইলিশ প্রতি কেজি ১হাজার টাকা, এক কেজি এবং এক কেজির ওপরের ইলিশ প্রতিকেজি ১৬৫০ টাকা।
মাছঘাটে অনলাইনে এবং খুচরা ইলিশ বিক্রি করেন মো. মাছুদ। তিনি বলেন, আমাদের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবচেয়ে বেশি পদ্মা-মেঘনার রূপালী ইলিশের অর্ডার আসে। কিন্তু গত ৩ বছর লোকাল ইলিশের আমদানি খুবই কম। চাহিদা থাকলেও আমরা ক্রেতাদেরকে দিতে পারছি না।
পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কম পাওয়ার বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, যেসব এলাকা ইলিশ পাওয়া যায়, সেখানে ইলিশের প্রাপ্যতা হ্রাসের বেশ কিছু কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণ হচ্ছে-নদীতে পানি প্রবাহ হ্রাস, সামগ্রিকভাবে দেশের বৃষ্টির পরিমাণ কম, নদীতে যে আবাসস্থল রয়েছে তাতে পরিবেশগত বিপর্যয় অনেকাংশ দায়ী। আবার নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবুচর জেগে উঠেছে। এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে অবশ্যই ইলিশ পাবেন জেলেরা।
চাঁদপুর করেসপন্ডেট, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২