বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেছেন, রাজনীতি করতে চাইলে রাজপথে আসেন, রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। আগে বলেছিলাম খেলা হবে, এবার বলছি দেখা হবে রাজপথে।
সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানী ঢাকার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ২৫ জুন আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। সেটি যেন বাংলার মানুষ সুন্দর ও সফলভাবে উদযাপন করতে না পারে সেই পাঁয়তারা শুরু করেছে। আজকে বলতে চাই, ফখরুল সাহেব, ’৭৫ সালের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার- যে শিক্ষা আপনি দিয়েছেন, সেই হাতিয়ার আপনি কোথায় রেখেছেন? এই হাতিয়ার বের করতে হবে। হাতিয়ার দিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করবেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রকে হত্যা করবেন, সেটা আমরা হতে দিতে পারি না। আপনাকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই – মুখে লাগাম দিন, বেফাঁস কথা বলবেন না।
তিনি বলেন, দেশে যখন শান্তি বিরাজ করছে, তখন দেশকে অস্থিতিশীর করতে পাঁয়তারা করছে বিএনপি। ১৪ দল যতদিন মাঠে থাকবে ততদিন স্বাধীনতাবিরোধী খালেদা জিয়ার শক্তি কোনো অবস্থাতেই মাঠে থাকতে পারবে না। শেখ হাসিনাকে জনগণ ক্ষমতায় বসিয়েছে মানুষের কল্যাণ এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আজকে আবার রাজপথে হুঙ্কার দেয়া হয় – ১৫ আগস্টের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। এরা কারা? এরা স্বাধীনতা ও ’৭১-এর শত্রু, ’৭৫ ও জেলহত্যার খুনি। তারা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। এখন আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
স্মরণ সভায় সভায় মোহাম্মদ নাসিমের কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে মায়ার চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদাায়িকতা ও জঙ্গিবাদ দমনে মোহাম্মদ নাসিমের মতো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন,পদ্মা সেতু নিয়ে আমরা সারাবিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছি। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র্র করে নাশকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন মেনে নিতে না পারায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাধাগ্রস্তÍ করতে বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১৪ সালের মতো বিএনপি জামাত আবারো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। ট্রেন, বাসে আগুন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, মোহাম্মদ নাসিম আমার রাজপথের সহকর্মী। মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটা করলেও তিনি জায়গা ছাড়েননি। তিনি আত্মগোপনে থাকার নিয়ম মানতেন না। আমি বলেছিলাম, এই যে ছুটে বেড়াচ্ছেন, আপনাকে করোনা ছাড়বে না। শেষ পর্যন্ত আমরা তাকে হারিয়ে ফেললাম।
এ সভায় ১৪ দলের নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতে মহানবীকে নিয়ে তৈরি হওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশেও অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। আবার আন্দোলনের নামেও দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বিএনপি। কোন অশান্তি হলে সরকারের সাথে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করবে বলেও ঘোষণা দেন জোট নেতারা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, দুই বারের সাবেক সফল মন্ত্রী, চাঁদপুরের কৃতি সন্তান জননেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবীরা। তারা মোহাম্মদ নাসিমের স্মৃতিচারণ করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, বাসদের আহবায়ক রেজাউর রশীদ খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আ.লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সাধারন সম্পাদক এস এ মান্নান কচিসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় দর্শক সারিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক আশফাক হোসেন চৌধুরী মাহি উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৪ জুন ২০২২