শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তরুণরাই পারবে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে। সেই তরুণদের ক্ষমতায়িত করে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।
১ জুন বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ ও বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ব্লেন্ডেড লার্নিং সল্যুশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তরুণরা যেন বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেজন্য তথ্য প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের অবাধ সুযোগ করে দিতে হবে। তরুণরা শুধু নিজেদের কাজের এবং চাকরির জন্য তৈরি করবে তা নয়। তারা উদ্যোক্তা হয়ে আরও বহু মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করবে। তেমন করেই তাদের তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং সেই পরিবেশটি তৈরিও করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আমরা এতদিন নজর দিইনি। কিন্তু আমরা যখন নজর দিলাম তখনি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র্যাংকিংয়ে অনেকদূর এগিয়েছে। এখন আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র্যাংকিংএ উন্নতি করবে।
ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে। যা আগামী বছর থেকেই চালু করা হবে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা একটি চ্যালেঞ্জ। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, মাত্র ৪ বছর সময়ে অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরের নেতৃত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল মেশিনে অফিস পরিচালনা করছে। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইসিটি নির্ভর ক্লাসরুম, ই-লাইব্রেরি সুবিধা প্রদান এবং কম্পিউটার ও ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবরেটরি, ফিজিক্স ল্যাবরেটরি, আইওটি ল্যাবরেটরি, ইলেক্টনিক্স ল্যাবরেটরি, ডাটা সেন্টার, ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল বোর্ড, লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এল এম এস), ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স (মুক), মাই বিডিইউ মোবাইল অ্যাপস, এক্সাম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস) স্থাপন,শিক্ষার্থীদের এক্সেস কার্ড প্রদান, ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন,গুগল জি-স্যুট ফর এডুকেশন প্রদান, প্রক্টরড রিমোট এক্সাম সিস্টেম সফটওয়্যার তৈরি, ডাটা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এনালাইটিক্স ল্যাবরেটরি স্থাপন আইওটি ল্যাবরেটরি স্থাপন, ব্লেন্ডেড ক্লাসরুম সল্যুশন প্রদান, ব্লেন্ডেড শিক্ষা সহায়ক লাইভ ক্লাসরুম চালু করেছে সেজন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপই হচ্ছে আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রযুক্তিমুখী অভিযাত্রা শুরু করেন, ১৯৭৫ সালে ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়া উপগ্রহ-ভূ কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
উপাচার্য বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় অবশ্যই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পরিবর্তনগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মানুষ, প্রযুক্তি এবং প্রকৃতি, এই তিনটি বিষয়ের মিশ্রণ ঘটিয়ে একটি নতুন সমাজ তৈরি করবে। এই সমাজটা কেমন হবে তার উপর ভিত্তি করে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সাজাতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ভবিষ্যৎ সমাজ, ভবিষ্যৎ কাজ এবং ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই তিনটি বিষয়ের পরিবর্তনকে ধারণ করে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিনির্মাণ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আশরাফুজ্জামান ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) ফারজানা আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো.আশরাফ উদ্দিন।
বার্তা কক্ষ, ১ জুন ২০২২