দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ছে। পূর্ণিমার প্রভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বরিশালের কীর্তনখোলা, ভোলার তেঁতুলিয়া, দৌলতখানের মেঘনা, ঝালকাঠির বিষখালী, মির্জাগঞ্জের পায়রা এবং বরগুনা ও পাথরঘাটার বিষখালী নদী। পানির তোড়ে কোনো কোনো নদী বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে, আবার কোনোটা ছুঁইছুঁই করছে। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। পানি ঢুকছে মুগ ও বোরো ধানের খেতে। এতে ফসল নিয়ে চিন্তিত কৃষক।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল নৌবন্দর-সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে পানি থইথই করছে। উত্তাল নদীতেও ঝুঁকি নিয়ে একের পর এক ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপার চলছে। আশপাশের নিচু এলাকায় পানি ঢুকছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্ভেয়ার মহসিন আলমের তথ্যমতে, গত সোমবার বরিশালের কীর্তনখোলায় পানির সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। যদিও এ নদীতে পানির বিপৎসীমা ২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। সাধারণত নদীতে পানির স্বাভাবিক সীমা ১ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। আগের দিন রোববার কীর্তনখোলা নদীতে পানির সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার। একইভাবে গত শনিবার কীর্তনখোলায় পানির সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার।
সূত্রমতে, গত সোমবার দ্বীপজেলা ভোলার তেঁতুলিয়া নদীতে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে দাঁড়িয়েছিল ২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। এ নদীর ডেঞ্জার লেভেলে ২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। দৌলতখানের মেঘনায় বিপৎসীমা (৩ দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ৩ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিষখালী নদী বিপৎসীমা (২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ২ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া ঝালকাঠির বিষখালী বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করে গত সোমবার পানির সর্বোচ্চ লেভেল ছিল ১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার, পিরোজপুরের বলেশ্বর নদে পানির সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার।
পাউবো বরিশালের গেজরিডার আ. রহমান বলেন, পূর্ণিমার জো-এর প্রভাবে কয়েক দিন ধরে কীর্তনখোলার পানি বেড়েছে। নদী উত্তাল, পানির চাপও বেশি।
বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠ শায়েস্তাবাদ, চরকাউয়া ও চরবাড়িয়া ইউনিয়নের নিম্ন এলাকাগুলো কীর্তনখোলা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। সদর উপজেলার আরেক ইউনিয়ন কালাবদর নদীর তীরে চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন। মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ফসলি জমি জোয়ারের তলিয়ে গেছে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক বলেন, এই অঞ্চলের মাঠে এখন বোরো ধান, মুগ, তিল, সবজি রয়েছে। তবে ফসলের খেতে পানি তেমন একটা প্রবেশ না করায় ফসল এখনো নিরাপদ রয়েছে। তিনি বলেন, এই অবস্থা আগামী ২-১ দিনে স্পষ্ট হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায় বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃষ্টি ২-১ দিনে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পূর্ণিমার জো-এর কারণে নদীর পানি বেড়েছে, এটা ২-১ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
বার্তা কক্ষ, ১৮ মে ২০২২