আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২২ সালের নির্বাচনে চতুর্থরের ন্যায় আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। সকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ঘুরে ঘুরে দেখেন, সবাই বলে-‘শেখ হাসিনা সরকার, বার বার দরকার’। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা থাকলে দেশ শান্তিতে থাকে, মানুষ পেট ভরে খায়, শান্তিতে ঘুমায়।’
১৬ মে সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শাম্স পরশ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মইনুল হোসেন খান নিখিল। সভা শেষে বাক-প্রতিবন্ধী, শ্রবণ-প্রতিবন্ধী এবং দৃষ্টি-প্রতিবন্ধীদের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি ও সাদা ছড়ি বিতরণ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের স্মৃতিচারণ করে মায়া চৌধুরী বলেন, সেদিন তাকে বরণ করে নিতে এক সপ্তাহ আগ থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়। নেত্রীর আগমণ উপলক্ষে সে সময় আমরা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে কাজ শুরু করি। সারা বাংলাদেশে তখন একটাই স্লোগান ছিল, ‘চলো চলো ঢাকা চলো, শেখ হাসিনাকে বরণ করো।’ আমরা ভেবেছিলাম দেড় থেকে দুই লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। কিন্তু আমরা দেখি যে সমাবেশটি প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হবে। তখন আমরা চিন্তায় পড়ি এতো লোক কিভাবে সামাল দিব। সেই দিন দেখেছিলাম মানুষের ভালোবাসা। নদী সাঁতরিয়ে, পাহাড় ডিঙ্গিয়ে তারা এসছিলো। সদরঘাট থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত মানুষে একাকার ছিল। সেদিন ১৮০ কি.মি. বেগে বৈরি আবহাওয়া থাকলেও কর্মীদের নড়াতে পারেনি।
তিনি বলেন, সেদিন শেখ হাসিনা এ দেশে পা রেখেই মাটিতে চুমু খেয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি মঞ্চে বলেন, ‘আমি সবকিছু হারিয়েছি, আমার আর হারাবার কিছু নাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে লড়াই করবো, আপনাদের ছেড়ে আমি যাব না।’ তিনি তার কথা রেখেছেন। তাকে এ পর্যন্ত ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিএনপি খুনির সরকার। আবার তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেখ হাসিনা সরকারকে পতন না করে তারা নাকি ঘরে ফিরে যাবেন না। হুশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, যদি আগুন সন্ত্রাসী করেন, আবার পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চান, ষরযন্ত্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চান; তাহলে আপনাদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। আপনাদের ঘরে তালা মেরে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কেউ আপনাদের দেয় নাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ফখরুল সাহেব আপনি নাকি একটি বড় দলের সাধারণ সম্পাদক। কথাবার্তা হিসেব করে বলা উচিৎ। যার যেমন ওজন তেমন কথা বলা উচিৎ। কথায় কথায় মিথ্যা কথা বলেন। সকাল থেকে শুরু করেন মিথ্যা বলা। টেলিভিশন না থাকলে এই ফখরুল মার্কা দল হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যেত না। আপনাদের বাঁচিয়ে রাখছে টেলিভিশন, টকশো ও মিথ্যা কথায়। সেই দিন চলে গেছে। যেই দলের নেত্রীর জন্মদিন তিনটা, সেই দল কে করে, পাগল, মিথ্যাবাদী ও সন্ত্রাসী ছাড়া? বিএনপির ইহকাল ও পরকাল কোনোটাই নাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার বিদুৎ উৎপাদনে রেকর্ড করেছে। এতো মেগাওয়াট বিদুৎ বিএনপি কখনও উৎপাদন করতে পারেনি। এখন ঘরে ঘরে বিদুৎ। আগে ট্রেনে ও ঘরে অন্ধকার ছিল, আর এখন আলোতে ঝলমল করে।
তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুবলীগের ভাইয়েরা লাশ দাফন করেছে। ফখরুল সাহেব বলেন- সব দল নিয়ে আন্দোলনে নামবেন। কিন্তু শুধু যুবলীগের নেতা ফু দিলেই সবাই উড়ে যাবেন। যুবলীগের নেতারা পরীক্ষিত।
আলোচনা সভায় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শাম্স পরশ বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলে এদেশের মানুষ প্রকৃত দেশ প্রেমিক ও আদর্শ নেতৃত্ব ফিরে পেয়েছে। সকল ভয়কে উপেক্ষা করে মাথায় কাফনের কাপড় বেধে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন এদেশের মানুষকে ভালোবেসে। সামরিক শাসনামলে তার দেশে ফেরা ছিল সাহসী ও ঝুকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মর্যাদাশীল দেশ। শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদ র্নির্মল ও বিচার বিভাগকে স্বাধীন করেছে। কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি আর হচ্ছেও না। এই সরকারের মতো ন্যায় পরায়নতা কোনো সরকার দেখাতে পারেনি।’
প্রতিবেদক: কামাল হোসেন খান, ১৬ মে ২০২২