জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ২৫০ কোটি ৩ লাখ টাকার প্রযুক্তি সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পসহ ৪ হাজার ৫শত ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকার ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
একনেক চেয়ারপার্সন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের ১৪তম সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন। বৈঠকে মন্ত্রিবর্গ, প্রতিমন্ত্রীগণ,পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যগণ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন,‘একনেক বৈঠকে ৪ হাজার ৫শত ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকার ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সকল প্রকল্পের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেয়া হবে।অনুমোদিত ১১ টি প্রকল্পের মধ্যে ৬ প্রকল্প নতুন এবং বাকি ৫টি প্রকল্প সংশোধিত।
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান,বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরকারের ওপর নির্ভর না করে নিজস্ব তহবিল হতে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান,বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ক্রমবর্ধমান প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে উপজেলাগুলোতে দুগ্ধ ভিত্তিক সমবায় সমিতির কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুধ থেকে ঘি ও গুড়ো দুধ উৎপাদনে কৃষি ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,‘আইসিটি বিভাগ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রযুক্তি সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প টি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি আটটি বিভাগের ৪৪টি জেলায় ১৩০ টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটির প্রথম নামকরন করা হয়েছিল ”সি পাওয়ার প্রজেক্ট”। তবে পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে করা হয়’হার পাওয়ার প্রজেক্ট”। প্রকল্পটির মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নারীকে আত্মসাবলম্বী করে গড়ে তোলা।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের হার পাওয়ার প্রকল্প, প্রযুক্তি সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন(২য় পর্যায়) প্রকল্প,স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের চারটি প্রকল্প যথাক্রমে দুগ্ধ ঘাটতি উপজেলায় দুগ্ধ সমবায়ের কার্যক্রম সম্প্রসারন,নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প,বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প,ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মেশিনারিজ সরবরাহ প্রকল্প ।
পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে কালিগঙ্গা নদীর ভাঙ্গন হতে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ এবং মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া, ঘিওর,মানিকগঞ্জ সদর এবং সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রক্ষাকল্পে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং পানগুছি নদীর ভাঙ্গন হতে বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সদর ও সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষন এবং বিশখালী নদী পুন:খনন প্রকল্প,রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারতের সাথে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগ্রেজ রেলপথ নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে সীমান্ত সড়ক (রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা) নির্মাণ পর্যায় (১ম সংশোধিত) প্রকল্প,জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ (কুমিল্লা) (১ম সংশোধিত) প্রকল্প,নবীনগর শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন (আর -২০৩) (১ম সংশোধন প্রকল্প)।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান,কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক,তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম,শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ,পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো.শাহাব উদ্দিন,ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব,প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব,এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ,সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বাসস
২০ এপ্রিল ২০২২
এ জি