সানাউল হক, ফরিদগঞ্জ | আপডেট: ০৯:৫৪ অপরাহ্ণ, ২৫ আগস্ট ২০১৫, মঙ্গলবার
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জে অবশেষে হারিয়ে যাওয়া শিশুর গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এ শিশু স্কুল থেকে আর বাড়ি ফিরেনি। শিশুর বাড়ি উপজেলার ১নং বালিথুবা ইউনিয়নের সেকদি গ্রামে।
মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ বাড়ির পাশের জমি থেকে শিশুর কঙ্কালসার গলিত লাশ উদ্ধার করে। এদিকে, রুবির লাশ উদ্ধার হয়েছে শুনে প্রতিবেশী এক যুবক আত্মগোপন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে ওই শিশুকন্যাকে ধর্ষণ শেষে মেরে ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের টেলু মিজির ৭ বছরের কন্যা রুবি আক্তার। গত ২৬ জুলাই রোববার রুবি যথারীতি পার্শ্ববর্তী ‘মুন্সি বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ যায়। দুপুরে স্কুল ছুটি হওয়ার পর রুবি আর বাড়ি ফিরে যায়নি। এতে তার মা ফাতেমা বেগম (৪০) তার সহপাঠীদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন রুবি স্কুলে ক্লাস শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরেছে।
এরপর শুরু হয় অপেক্ষার পালা। রুবি আর বাড়ি যায়নি। রুবির বাবা টেলু মিজি গভীর রাত পর্যন্ত সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হন। তিনদিন পর তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নং- ১১৬০, তারিখ: ২৯-০৭-১৫) করেন।
রুবির বাবা টেলু মিজি জানান, গত ক’দিন আগে রুবির পায়ের জুতা পার্শ্ববর্তী একটি জমির আইল থেকে উদ্ধার করে তার মা। এরপর থেকে রুবির মা এক অজানা আশংকায় প্রতিদিন জুতা পাওয়ার স্থানে মেয়েকে পাওয়ার আশায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনি প্রতি দিনকার ন্যায় খুঁজতে খুঁজতে দেখেন প্রতিবেশী ছলেমান মিজির ফসলী জমিতে লতাপাতা ও একটি বস্তায় ঢাকা স্তূপে কি যেনো দেখা যাচ্ছে। তিনি উৎকণ্ঠা নিয়ে সেখানে ছুটে গিয়ে লতা পাতা সরিয়ে দেখেন, মানুষের কঙ্কাল দেখা যাচ্ছে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরাও ছুটে যান। তিনি ধারণা করছেন, তার শিশু কন্যাকে ধর্ষণ শেষে মেরে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা রুবির গলিত ও কঙ্কালসার দেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও কঙ্কাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে ক’দিন পূর্বে শিশু রুবির জুতাপ্রাপ্তি, গলিত লাশের গড়ন, অক্ষত পা ও মুখের দাঁত দেখে কঙ্কালসার গলিত দেহ রুবির বলে তার মা বাবা শনাক্ত করেছে।
টেলু মিজি মঙ্গলবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, রুবি হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী এক যুবক (২৩) আমার সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। সে আমার ছেলের বয়সী হওয়া সত্ত্বেও পরপর ক’দিন আমাকে বলছিলো, “এই তোর মেয়েকে আমি বিক্রি করে দিয়েছি। সে দূর দেশে চলে গেছে”।
আমি ভাবতাম সে আমার সঙ্গে দুষ্টুমী করছে। তবে, তার অস্বাভাবিক আচরণের কথা আমি ক’জনকে বলেছি।
তিনি বলেন, রুবির লাশ উদ্ধার হয়েছে শুনে সেই যুবক আত্মগোপন করেছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ঘটনায় টেলু মিজির দায়েরকৃত জিডি হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু নাছের বলেছেন, মামলাটি এখনো তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। ব্যাপক তদন্তের পরেই ঘটনার রহস্য জানা করা যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো সহসাই ক্লু জানা যেতে পারে।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur